ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

পূর্ণাঙ্গ ইকো-সিস্টেম নিয়ে শক্ত অবস্থানের পথে ইভ্যালি

সোলাইমান শাওন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২০
পূর্ণাঙ্গ ইকো-সিস্টেম নিয়ে শক্ত অবস্থানের পথে ইভ্যালি

ঢাকা: ই-কমার্স ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ইকো-সিস্টেম নিয়ে দেশের বাজারে শক্ত অবস্থান অর্জনের পথে রয়েছে ইভ্যালি ডট কম ডট বিডি। প্রায় ৩৫ লাখ নিবন্ধিত গ্রাহক, ১০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিক্রেতা এবং নামিদামি ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে স্বনির্ভর মার্কেটপ্লেস হিসেবে গড়ে উঠছে দেশিয় প্রতিষ্ঠানটি।

জানা যায়, বাংলাদেশের বাজারে ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ইভ্যালি। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা কিংবা আমাজনের মতো বাংলাদেশের বাজারে প্রতিষ্ঠিত এবং শক্ত অবস্থান অর্জন করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সেই লক্ষ্য অর্জনে সম্পূর্ণ ই-কমার্স ভিত্তিক ইকো-সিস্টেম তৈরির পথে ইভ্যালি কাজ করছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

ইভ্যালি এক্সপ্রেস

করোনাকালের শুরুতেই বিভিন্ন ধরনের গ্রোসারি পণ্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিষ্ঠানটি চালু করে ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ। গ্রোসারি পণ্যের পাশাপাশি পরে এতে যুক্ত হয় মাছ, মাংস এবং জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মতো পণ্যও। রাজধানী ঢাকার বাইরে ৩০টিরও বেশি জেলায় এবং কিছু কিছু জেলার ইউনিয়ন পর্যায়েও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে ইভ্যালি।

ইভ্যালি ফুড এক্সপ্রেস

পণ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সেবা চালুর অংশ হিসেবে ইভ্যালি নিয়ে আসে বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার সেবা। ইভ্যালি ফুড এক্সপ্রেস বা ই-ফুডের মাধ্যমে রাজধানীর বিখ্যাত সব রেস্টুরেন্টের খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ই-ফুডের যাত্রা শুরুর প্রথম মাসেই সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রায় ৫০ হাজার ডেলিভারি সফলভাবে গ্রাহকদের অবস্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

...

ই-বাজার

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যেন ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে পণ্য কেনাবেচা করতে পারেন তার জন্য ই-বাজার নামক আরেকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান চালু করেছে ইভ্যালি। আসছে ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশু বিক্রেতারাও এখান তাদের পশু বিক্রি করতে পারবেন। কেনা-বেচার এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে বিনামূল্যে। গ্রাহক এবং বিক্রেতার উভয়ের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে অতিরিক্ত কোনো খরচ ছাড়াই পেমেন্ট পদ্ধতিও রাখা হয়েছে ই-বাজারে। প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার বার করে ডাউনলোড হচ্ছে অ্যাপটি।

ই-খাতা

ইকমার্স বা যেসব ব্যসায়ীদের ব্যবসায় এখন পর্যন্ত প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগেনি তাদের জন্য ‘ই-খাতা’ নামক ইনভেনটরি এবং অ্যাকাউন্টিং সলিউশন রয়েছে ইভ্যালির। এর মাধ্যমে ই-কমার্সের সঙ্গে আরও বেশি যুক্ত হতে পারবেন ট্র্যাডিশনাল ব্যবসায়ীরা। অটোমেশনের মাধ্যমে নিজেদের পণ্য এবং লেনদেনের হিসাব রাখা যাবে ই-খাতায়। এতে কমবে ব্যবসা পরিচালন ব্যয়।

ইভ্যালি সম্পর্কে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমরা প্রযুক্তি নির্ভর, স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ই-কমার্স ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলতে চাইছি। এটি হবে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে সব ধরনের পণ্য ও সেবা পাওয়া যাবে। আমাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে বসুন্ধরা গ্রুপের টগি সার্ভিসেস, ওয়ালটন, স্যামসাং, এমআই, টিভিএস, বাজাজ, হোণ্ডা, পারটেক্স, ব্রাদার্স ফার্নিশার্স, বেঙ্গল গ্রুপের মতো স্বনামধন্য এবং জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ড যুক্ত আছে। খাবার আইটেমের কথা বললে গ্লোরিয়া জিনস বাংলাদেশ, বিএফসি, সিক্রেট রেসিপি, শেফস টেবিল, কোকা কোলার মতো প্রতিষ্ঠানের খাবার ও বেভারেজ পণ্য সরবরাহ করছি। ফুড ডেলিভারি সেবা এবং ডেলিভারি বিভাগ ই-লজিস্টিক্সে স্থায়ী এবং ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে অন্তত তিন হাজার ‘ইভ্যালি হিরো’ তথা রাইডারের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিভিন্ন খাতের ওপর আলাদা আলাদা ওয়েব এবং স্মার্টফোনের জন্য অ্যাপ ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। ই-বাজার চালু হওয়ার মাত্র ১৬ দিনে ৬০ হাজার গ্রাহক এতে যুক্ত হয়েছেন। গেল জুন মাসের গুগল ট্রাফিক এবং ট্রেন্ডসের হিসাব মতে, বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত ই-কমার্স সাইটগুলোর মধ্যে আমরাই এখন শীর্ষে। এই মাসে মোট ৪৯ লাখ ৩৯ হাজার ৪৫৬ বার গুগলে ‘ইভ্যালি’ সরাসরি সার্চ করা হয়েছে। বিভিন্ন রেফারেল লিঙ্ক থেকে ইভ্যালি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৫২৮ বার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ট্রাফিক এসেছে ১২ লাখ এক হাজার ৪১৬টি।

ব্যবসায়িক গ্রোথ এবং বিনিয়োগ নিয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমরা এই মুহূর্তে মাসে প্রায় ১০ লাখ অর্ডার নিয়ে কাজ করছি। ই-কমার্সে বিদেশি বিনিয়োগ আসতেই পারে। যেমন আমাদের ই-খাতায় ভারতের ‘খাতাবুক’ এর মতো গ্রোথ হতে পারে। জিও’তে যেমন ফেসবুক, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ আছে। আমরাও ইভ্যালিতে এমন বিদেশি বিনিয়োগ আশা করছি। ইতোমধ্যে আমরা দেশি-বিদেশি শীর্ষ এয়ারলাইন্স টিকিটিং পার্টনার এবং হোটেল চেইনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। তবে প্রতিষ্ঠান দেশিয় না হলে টেলিকম খাতের মতো ই-কমার্স খাতও বিদেশিদের দখলে চলে যেতে পারে। আমরা দেশের জনগণ এবং সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিক সাহায্য পাচ্ছি। এখনই সময় দেশিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্ত অবস্থান অর্জনে আরও বেশি সমর্থন ও সাহায্য করার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্ট, জুলাই ১৮, ২০২০
এসএইচএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।