ঢাকা: বাংলাদেশ ও ভারত এ দুটি দেশের মধ্যে এখনও চলছে সাইবার টেক্কা। ভারতের সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত ২০ হাজার ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার পরও এ মেধা লড়াই এখনও অব্যাহত।
বাংলাদেশে এ সাইবার যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস, বাংলাদেশ সাইবার আর্মি এবং এক্সপায়ার সাইবার আর্মি।
বাংলাদেশ-ভারত সাইবার যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও তৎপর। তবে হ্যাকিং যুদ্ধে বাংলাদেশের হ্যাকারদের কথা জানিয়েছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিনজুড়ে ভারতীয় সংবাদামাধ্যমগুলোতে গুরুত্বের সঙ্গেই প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ-ভারত হ্যাকিং সংবাদ।
হ্যাকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশের হ্যাকার পরিচয়দানকারী ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস গ্রুপের ফেসবুক ফ্যান পৃষ্ঠার বরাদ দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশি হ্যাকাররা ভারতের ৪০০ টি সাইট ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ ছাড়া ২০ হাজারের বেশি সাইটের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ করেছে হ্যাকাররা।
হ্যাকিংয়ের কারণে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এবং পুঁজিবাজারের সাইটটি গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ মুহূর্ত পূজিবাজারের সাইটটি বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে ভারতীয় হ্যাকার ইন্ডিশেল দাবি করেছে, বাংলাদেশি হ্যাকারদের প্রতিরোধ করতে তারা বাংলাদেশের ৩০০ টি সাইট আক্রমণ করেছে। তবে সাইটগুলো তেমন ক্ষতি হয় নি।
২০ হাজার ওয়েবসাইট হ্যাক করার পর হ্যাকাররা সাইট সূত্র জানিয়েছে, বিএসএফের সীমান্তে হত্যাকাণ্ড এবং অত্যাচার বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশি হ্যাকাররা এ আক্রমণ শুরু করেন।
গত সপ্তাহে ভারতীয় সাইবার আর্মি নামের একটি হ্যাকারদল বাংলাদেশের পাঁচটি মন্ত্রণালয় এবং একটি বাণিজ্য সংস্থার ওয়েবসাইট আক্রমণ করে।
এদিকে বাংলাদেশ-ভারত এ লড়াইয়ে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিরিয়া এবং সৌদিআরব ছাড়াও বেশ কিছু দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে যেসব তথ্য প্রকাশ হচ্ছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস।
এ ছাড়াও ভারতের হ্যাকারদের সঙ্গে ইসরাইল এবং রাশিয়ার সম্পৃক্ততা আছে বলে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এ সংবাদের প্রতিবাদও জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারসের ফেসবুক পৃষ্ঠায় তারা বলছে, আমরা নিজেদের যুদ্ধ নিজেরাই পরিচালনা করতে সক্ষম। এ জন্য আমাদের কারো সহযোগিতা চাইবো না। ১৯৭১ এর চেতনাকে সমুন্নত রেখেই আমরা এই যুদ্ধে নেমেছি।
তাই পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো রকমের সম্পৃক্ততার প্রশ্নই আসে না। আমরা আমাদের ভাইয়ের রক্তে রাঙানো হাত/মায়ের অস্রুজল চোখের সাথে বেঈমানী করব না। এ জন্য সব হ্যাকার, পেজ অ্যাডমিন, সচেতন ফেসবুকার, ব্লগারদের সাহায্য কামনা করছি। এটা ওয়েবের লড়াই, তাই ভুল। তথ্য ছড়াতেই পারে। এ প্রতিবাদের আপনারাও আসুন আমাদের সঙ্গে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে ভারত সরকারের প্রতি একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেI বিডি ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস। ভিডিওতে মুখোশ পরা এক হ্যাকার রোবটিক ভাষায় বক্তব্য প্রদান করেন।
মুখশধারী বলেন, হ্যালো বাংলাদেশের নাগরিকরা, আমরা বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস। এখন সময় আমাদের চোখ খোলার। বিএসএফ এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে। তাদের গুলিতে আহত হয়েছে ৯৮৭ বাংলাদেশি।
এছাড়াও অপহৃত হয়েছে হাজারো মানুষ। এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তারা অবিচার করছে। সঙ্কটময় এ মুহূর্তে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা চাই ভারত সরকার নিরপরাধ বাংলাদেশিদের হত্যা করা বন্ধ করুক। তা না হলে আমরা ভারতে সাইবার আক্রমণ চালিয়ে যাবে। এবং তা চলতেই থাকবে।
বাংলাদেশ সময় ২২৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১২