ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারীর মৃত্যুদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারীর মৃত্যুদণ্ড ট্রান্সজেন্ডার নারী অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিন

সাবেক প্রেমিকাকে হত্যার অপরাধে এক ট্রান্সজেন্ডার নারীর (৪৯) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত৷ মিসৌরির আদালতের এক আদেশের ১৬ বছর পর মঙ্গলবার বোনে টেরে শহরের ডায়াগনোস্টিক অ্যান্ড কারেকশন সেন্টারে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে এ শাস্তি কার্যকর করা হয়৷

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো কোনো ট্রান্সজেন্ডার নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো।

ট্রান্সজেন্ডার ওই  নারীর নাম অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিন।

২০০৬ সালে তার সাবেক গার্লফ্রেন্ড বেভারলি গুন্থারকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত৷ 

মৃতুদণ্ডের আগে অ্যাম্বার এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, আমি যা করেছি তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি একজন প্রেমময় এবং যত্নশীল ব্যক্তি।

আদালতে প্রমাণিত হয়, অ্যাম্বারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন বেভারলি। কিন্তু তাকে ক্রমাগত উত্যক্ত করে আসছিলেন অ্যাম্বার। ওই সময় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন বেভারলি৷  

২০০৩ সালে মিসিসিপি নদীর তীরে বেভারলির লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ ময়নাতদন্তে ধরা পরে ধর্ষণের পর বেভারলিকে রান্নাঘরের ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়েছিল সেখানে৷

বেভারলিকে খুনের দায়ে অ্যাম্বারলিকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারকরা। একজন বিচারক তখন মিসৌরির বিশেষ আইন প্রয়োগের পক্ষে রায় দেন৷ 

তবে রায়ের পরও অ্যাম্বারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায়নি৷ ১০ বছর পর ২০১৬ সালে অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিনের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে নতুন করে শুনানির আদেশ দেয় আদালত৷ 

২০২১ সালে কেন্দ্রীয় আপিল আদালত ২০০৬ সালের আদেশই বহাল রাখে৷ এই আদেশের বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন অ্যাম্বারের আইনজীবীরা। এ ট্রান্সজেন্ডারের যন্ত্রণাময় শৈশব এবং দীর্ঘদিন ডিপ্রেশনে ভোগাকে অপরাধকর্মের পরোক্ষ কারণ হিসেবে উল্লেখ করে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার আর্জি জানান তারা৷ 

কিন্তু মিসৌরির গভর্নর মাইক পারসন তাতে সায় না দিয়ে মৃত্যুদণ্ডই বহাল রাখেন।  

রায় বহালের বিষয়ে এক লিখিত বিবৃতিতে মিসৌরির গভর্নর মাইক পারসন বলেন, ম্যাকলাফলিনের কারণে জীবনের শেষ কয়েকটি বছর মিস গুন্থারকে ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে কাটাতে হয়েছে৷ অবশেষে তার পরিবার এবং অন্যান্য ভালোবাসার মানুষেরা একটু শান্তি পেলেন৷

মিসৌরির কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ৪৯ বছর বয়সি এই ট্র্যান্সজেন্ডার নারী তিন বছর ধরে তার পূর্ণাঙ্গ নারী সত্তায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন৷ তবে তিনি কোনো ধরনের হরমোন চিকিৎসা নেননি৷ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগ পর্যন্ত পুরুষ আসামিদের জন্য নির্ধারিত সেলও ছাড়েননি৷

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে, সিবিসিনিউজ

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।