ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভারতের উচিত নিজেদের আকাশ মিয়ানমারকে ব্যবহার করতে না দেওয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
ভারতের উচিত নিজেদের আকাশ মিয়ানমারকে ব্যবহার করতে না দেওয়া

চলতি সপ্তাহে চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ) নামে একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এ অভিযানে নিজেদের সীমান্তের পাশাপাশি ভারতীয় সীমান্তেও বোমা নিক্ষেপ করে দেশটির বিমানবাহিনী।

এ ঘটনাটিকে ঝুঁকি হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপ ফরটিফাই রাইটস।

তাদের দাবি, ভারতের উচিত মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমানকে তাদের আকাশ পথ ব্যবহার করতে না দেওয়া। দেশটিকে এ আহ্বান জানাতে ভারতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে মানবাধিকার গ্রুপটি।  

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা নিজেদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়। খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার ও বুধবার পশ্চিম মিয়ানমারের চিন রাজ্যে বিরোধী গোষ্ঠী সিএনএফ’র বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে দেশটির বিমান বাহিনী। এ হামলায় কিছু বোমা ভারতীয় সীমান্তেও পড়ে।  

মঙ্গলবার শুরু হওয়া এ অভিযানে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের কাছাকাছি গড়ে ওঠার সিএনএফ’র ক্যাম্প ভিক্টোরিয়ায় হামলা চালানো হয়। এ সময় মিয়ানমার বিমান বাহিনীর ছোড়া বোমার আঘাতে দুই নারীসহ পাঁচ সিএনএফ সদস্য নিহত হয়। এ ছাড়া দুটি বোমা মিজোরামের চামফাই জেলার ফারকাউন গ্রামের কাছে পড়ে।  

ফরটিফাই রাইটস মিয়ানমারের সামরিক শাসনের সময় তাদের যুদ্ধবিমানকে ভারতীয় আকাশ সীমায় প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করলেও বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি ভারত সরকার। তবে চাম্পাই জেলা পুলিশ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।  

মানবাধিকার গ্রুপটি ভারতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের আহ্বান জানায় বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি)। ফোরটি ফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেন, নিজের আকাশসীমায় জান্তার অনুপ্রবেশ সহ্য করা উচিত নয় নয়াদিল্লীর। বেসামরিক ও সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব ক্ষমতায় সবকিছু করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার জান্তাকে তার নিজস্ব ভূমিতে আক্রমণের সময় অন্যের আকাশসীমা সম্পর্কে অবগত থাকা উচিত। এবং ভারতকে অবশ্যই তার আকাশসীমা ব্যবহার করে সীমান্ত অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। জান্তাকে তার অপরাধের জন্য দায়ী করে ভারতের জবাবদিহি করার জন্য বলা জরুরি।  

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের আকাশ সীমাও লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে গ্রুপটি।  

চিন রাজ্যে খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের বসবাস বেশি। সিএনএফ গোষ্ঠীটি মূলত তাদের প্রতিনিধিত্ব করে বলে দাবি করে। গোষ্ঠীর মুখপাত্র সালাই হেতেত নি দাবি করেছেন, বুধবার তাদের অঞ্চলে সাতটি বোমা ফেলেছে জান্তা সরকার। তাদের বিমান হামলায় আমাদের কিছু বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। এরমধ্যে একটি বোমা ভারতের দিকে পড়েছিল।

চিন রাজ্য ভিত্তিক একটি মিডিয়া তাদের প্রতিবেদনে হামলাকারী যুদ্ধবিমানকে মিয়ানমারের বলে দাবি করে। এ ছাড়া ক্যাম্প ভিক্টোরিয়া ও ভারতের অভ্যন্তরে পড়া বোমা যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে চিত্রও প্রকাশ করে।  

সীমান্তে মিয়ানমারের বিমানবাহিনীর ছোড়া বোমার কথা জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না দিলেও তারা জানিয়েছে, একটি বোমা দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমানার মধ্যে একটি নদীতে পড়েছিল।

চাম্পাই জেলার পুলিশ সুপার লালরিনপুইয়া ভার্তে বলেছেন, আমাদের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ওই বোমার আঘাতে ভারতের কারও জীবন বা সম্পত্তির কোনো ক্ষতি হয়নি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সিএনএফ’র যোদ্ধাদের সংখ্যা কমেছে। গোষ্ঠিটি ২০১৫ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করেছিল।  

সূত্র: আল জাজিরা

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
এসআইএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।