ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

খাদ্য সমস্যা মোকাবিলায় অবদান রাখতে পারে মাইক্রোগ্রিন্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
খাদ্য সমস্যা মোকাবিলায় অবদান রাখতে পারে মাইক্রোগ্রিন্স

চেন্নাইয়ে একটি আবাসিক এলাকায় বাস করেন বিদ্যাধরন। তার বয়স ৫৬।

জীবনের বেশিরভাগ সময় শিক্ষা খাতের এনজিও-তে কাজ করলেও তিনি আসলে চাষি হতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, কৃষি আমার আবেগের জায়গা। একটি সময় আমার খামার ছিল, তবে সেটা লোকসানে চলতো।

মোটা অংকের বিনিয়োগ ও চেন্নাইয়ের বাইরে খামার চালানোর খরচের কারণে তাকে চাষের কাজ ছেড়ে দিতে হয়। এরপরও নিজের স্বপ্ন ত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। বিকল্প কৃষিপদ্ধতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে গিয়ে তিনি মাইক্রোগ্রিন্স সম্পর্কে জানতে পারেন।

মাইক্রোগ্রিন্স আসলে কচি ও ভোজ্য চারাগাছ, যেগুলো অঙ্কুরের এক মাসের মধ্যেই বেড়ে ওঠে ও ফসল তোলার যোগ্য হয়ে ওঠে। পুষ্টিতে ভরপুর এমন উদ্ভিদকে সুস্বাদু সুপারফুড হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। ছোট, সীমাবদ্ধ পরিবেশেও সহজে এমন উদ্ভিদ চাষ করা সম্ভব।

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা মহাকাশ অভিযানে মাইক্রোগ্রিন চাষ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ অভিযানের সময় মহাকাশচারীদের জন্য যথেষ্ট পুষ্টি নিশ্চিত করাই সেই উদ্যোগের উদ্দেশ্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশে বেশ কয়েক দশক ধরে সালাদের টপিং হিসেবে মাইক্রোগ্রিন্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভারতের শহরাঞ্চলের রেস্তোরাঁর খাদ্য তালিকায়ও এর প্রচলন বাড়ছে।

বিদ্যাধরন বলেন, আমাদের কাছে লাল, সাদা ও গোলাপি মুলার বৈচিত্র্য রয়েছে। সূর্যমুখী ফুল, মটরের অঙ্কুর, ব্রকোলি, বাঁধাকপি, লাল অ্যামরান্থাসও আছে। আমরা এমন ১২ ধরনের মাইক্রোগ্রিন্স চাষ করি।

নিজের গ্রিনহাউস ও বাসার বারান্দায় সে সব চাষ হয়। জায়গাটি সব মিলিয়ে দশ বর্গ মিটারের বেশি নয়। স্ত্রী ও কন্যাও তাকে সাহায্য করেন। বীজ বপন থেকে শুরু করে বিতরণ পর্যন্ত সব কাজ পরিবারই সামলায়।

বিদ্যাধরন বলেন, এক্ষেত্রে সুবিধা হলো, ছোট জায়গায় বিশাল পরিমাণ উৎপাদন সম্ভব। প্রাথমিক বিনিয়োগ এক লাখ রুপিরও কম। মুনাফা ভালোই হয়। মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় হয়।

চাপের মুখে রয়েছে ভারতের কৃষিক্ষেত্র। ফলন কমছে, পানিসম্পদ লোপ পাচ্ছে এবং পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। অতীতে চাষের উদ্যোগের সময় বিদ্যাধরনেরও হাতেনাতে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে।

অন্যদিকে মাইক্রোগ্রিন্সের চাষ একইসঙ্গে সহজ ও টেকসই। সবার আগে ভার্মিকম্পোস্ট দিয়ে ট্রে ভরিয়ে দিতে হবে। তারপর ঘন ও সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করতে হবে। তার ওপর সামান্য পানি স্প্রে করে অঙ্কুর প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

কয়েকদিনের জন্য ট্রেগুলো অন্ধকারে রেখে দিতে হয়। তৃতীয় দিন পর থেকে সেগুলোকে সূর্যের আলো দেওয়া হয়।

বিদ্যাধরন বলেন, সাত থেকে আট দিনের মধ্যে সেগুলো নির্দিষ্ট উচ্চতা ছোঁবে। তারপর অর্ডারের ওপর নির্ভর করে আমরা ফসল তুলবো।

সূত্র- ডয়েচে ভেলে

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৩
এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।