জিন্নাহ হাউসের অবস্থা দেখার পর লাহোরের কর্পস কমান্ডার হাউসের ভাঙচুরের নেপথ্যে থাকাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার দেখতে চান তিনি।
শনিবার ( ১৩ মে) লাহোরে পাঞ্জাব সেফ সিটি অথরিটি হেডকোয়ার্টারে এক বৈঠকে অংশ নেন শেহবাজ। সেখানেই এ নির্দেশনা দেন তিনি।
পাঞ্জাব সেফ সিটি অথরিটি হেডকোয়ার্টারের বৈঠকে সভাপতি হিসেবে পৌঁছানোর আগে প্রধানমন্ত্রী ভাঙচুর করা জিন্নাহ হাউসও পরিদর্শন করেন।
শেহবাজ ওই বৈঠকে বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব অপরাধী ও হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা উস্কানি দিয়েছিল, সাহায্য করেছিল, বিশৃঙ্খলাকারী সবাইকেই গ্রেপ্তারের আওতায় আনতে হবে। এ ধরনের সন্ত্রাস গ্রহণযোগ্য নয়।
জিন্নাহ হাউস সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। পুরো জাতি এ ঘটনায় শোকাহত। পাকিস্তানের ইতিহাসে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে ৯ মে। কর্পস কমান্ডার হাউস হল, ঐতিহাসিক জিন্নাহ হাউসের এমন অবস্থা দেখা আসলেই হতাশাজনক।
এ সময় পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমালোচনা করেন শেহবাজ। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার লোকজন পাকিস্তান বিরোধী উপাদানের চেয়ে কম কিছু না। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করা উচিত। এ সময় দেশের আইন ‘লোহার হাতের’ মতো দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেহবাজ আরও বলেন, গত ৭৫ বছরে সন্ত্রাসীরা যা করতে পারেনি, পিটিআই দুর্বৃত্তরা তা করে দেখিয়েছে। একটি পরিকল্পনার অধীনে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করা হয়েছে। তিনি শহীদ স্মৃতিসৌধেরও ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে বিচারের আহ্বানও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অপরাধীদের শাস্তি দিতে যদি রাতেও সন্ত্রাসবিরোধী আদালত খুলতে হয়, তবে সেটি করা জরুরি। পুরো পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য, তাই বিলম্ব ছাড়াই দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে নির্দেশ দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারারকে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশও দেন তিনি।
বৈঠকের আগে অন্তর্বর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নকভির সঙ্গে ভাংচুর করা লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউসে যান শেহবাজ শরীফ। সেখানে তিনি তিনি দেশের সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। পরে সহিংসতায় আহতদের দেখতে সার্ভিসেস হাসপাতালে যান।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৯ মে) পিটিআই প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভকারীরা তার মুক্তির দাবিতে লাহোরের কোর কমান্ডারের বাসভবন ও লাহোরের জিন্নাহ হাউসে হামলা চালায়। তা ছাড়া সেনাবাহিনীর সম্পত্তি ও স্থাপনায় আক্রমণ চালানো হয়। পিটিআই অবশ্য সহিংসতার জড়িত থাকার বিষয়ে অস্বীকার করেছে। তা ছাড়া পাকিস্তানের আইএসপিআরের বিবৃতিকে ‘ভূমি বাস্তবতার বিরুদ্ধে’ বলে অভিহিত করে।
এ হামলা ও সহিংসতার দায়ে জেনারেল হেডকোয়ার্টারে (জিএইচকিউ) জ্যেষ্ঠ পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
সূত্র: জিও টিভি
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
এমজে