তিনদিন পেরিয়ে গেলেও ভারতের উত্তরাখণ্ডের একটি টানেলে আটকা পড়া ৪০জন শ্রমিককে উদ্ধার করা যায়নি।
এ বিলম্বের কারণ হিসেবে উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন করে ভূমি ধসের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে পাইপ প্রবেশ করিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।
রোববার (১২ নভেম্বর) ভোর ৪টায় উত্তরাখণ্ডের সিল্কইয়ারা ও দান্দানগাঁওকে যুক্ত করতে যাওয়া নির্মাণাধীন টানেলে ধসের ঘটনা ঘটে। একটি ২০ মিটারের পাথরের স্ল্যাব সুড়ঙ্গের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় টানেলের ভেতরে কাজ করছিলেন অন্তত ৪০জন শ্রমিক।
আটকে পড়া শ্রমিকরা বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিম বঙ্গ, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম। টানেলটি দেরাদুনের কাছে নির্মাণ হচ্ছে।
এখনবধি শ্রমিকদের উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে প্রাকৃতিক কারণকে দুষছে প্রশাসন। তারা বলছে, ফের ধসে বার বার উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত ঘটছে। নতুন করে এলাকায় ধস নামায় উদ্ধারকর্মীরা কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন।
প্রশাসনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শ্রমিকদের উদ্ধার করার সবরকম চেষ্টা হচ্ছে। ড্রিল করে একটি পাইপ টানেলের ভেতরে ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে। সেই পাইপ দিয়েই শ্রমিকরা বেরিয়ে আসতে পারবেন। মঙ্গলবার সেই পাইপ ঢোকানোর প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেয়েছিল। কিন্তু নতুন করে ধস নামায় সেই কাজ বন্ধ করতে হয়। আবার নতুন করে ড্রিলিংয়ের কাজ শুরু করতে হয়।
নয়াদিল্লি থেকে নতুন ড্রিল মেশিন নিয়ে এসে নতুন উদ্যমে ফের উদ্ধারের কাজ শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
উত্তরকাশীর ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক রুহেলা জানিয়েছেন, ১৯ মিটারের একটি প্যাসেজ তৈরি করে শ্রমিকদের উদ্ধার করার চেষ্টা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে বুধবারের মধ্যে শ্রমিকদের উদ্ধার করা যাবে।
এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে উত্তরাখণ্ডে এই মুহূর্তে টানেল তৈরির কাজ বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন ভারতীয়
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাংশু কাপারওয়ান।
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, উত্তরাখণ্ডে ইদানীং গোটা বছর ধরেই পাহাড়ে ধস নামতে দেখা যায়। তারপরেও সরকার কেন টানেল তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এর আগে জোশীমঠে বিরাট এলাকাজুড়ে ধস নেমেছে।
তার মতো পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, যেভাবে উত্তরাখণ্ডে পাহাড় কেটে রাস্তা এবং টানেল তৈরি করা হচ্ছে, তা হিমালয়ের চরম ক্ষতি করছে। দ্রুত এই কাজ বন্ধ হওয়া দরকার।
সাড়ে চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলটি উত্তর কাশীর সঙ্গে যমুনাত্রীর সংযোগ স্থাপনে নির্মাণ করা হচ্ছিল। এটির মাধ্যমে উত্তরকাশি থেকে যামুত্রী ড্যাম পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার পথ কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
এসএএইচ