ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনায় নিন্দার ঝড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৪
পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনায় নিন্দার ঝড় পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি

ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে কয়েক হাজার নতুন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনায় বেশ কয়েকটি দেশ নিন্দা জানিয়েছে। তেল আবিবের কট্টর মিত্র দেশগুলো থেকেও নিন্দা এসেছে।

খবর আল জাজিরার।

দেশটির বসতি-পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ বুধবার অধিকৃত ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নতুন করে অবৈধ সাড়ে তিন হাজার বসতি নির্মাণে অনুমতি দেয়। গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর এটিই প্রথম এ ধরনের পরিকল্পনায় অনুমোদন ইসরায়েলের।

ইসরায়েলি বসতিগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রতিবন্ধক হিসাবে দেখা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে অবৈধ বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার প্রতিশোধ হিসেবে মালে আদুমিম, কেদার ও ইফরাতে বসতি নির্মাণের সাম্প্রতিক এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে

পশ্চিম তীরে বেসামরিক বিষয়ের দায়িত্বে থাকা উগ্র ডানপন্থী নেতা ও ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেন, শত্রুরা আমাদের ক্ষতির চেষ্টা করছে, আমাদের দুর্বল করে দিতে চাইছে। তবে আমরা এ ভূমিতে বসতি নির্মাণ চালিয়ে যাব।

তিনি বলেন, গত বছরে অনুমোদন পাওয়া ১৮ হাজার ৫১৫টি হাউজিং ইউনিট অবৈধ বসতিগুলোতে যুক্ত হবে।  

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব বসতিকে অবৈধ উল্লেখ করে বলেছে, এসব সহিংসতার চক্র অব্যাহত রাখার আহ্বান।  

মন্ত্রণালয় দ্রুত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে, যা ইসরায়েলকে আরও বসতি নির্মাণ থেকে বিরত রাখবে। এতে ইসরায়েলের (জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার) বেন-গভির ও স্মোট্রিচসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছে, যারা অবৈধ বসতি বাড়ানোর সঙ্গে এর অর্থায়নে ভূমিকা পালন করেন।  

গাজা উপত্যকা শাসনকারী হামাস ইসরায়েলের পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনের ভূমি নিয়ন্ত্রণ, জনগণকে সীমাবদ্ধ করা এবং তাদের বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে ইহুদিবাদী পরিকল্পনার নিশ্চিতকরণ বলে আখ্যা দিয়েছে।  

এক বিজ্ঞপ্তিতে হামাস বলছে, এই মিথ্যা ঘোষণার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এটি অবজ্ঞা ও বেপরোয়া বার্তা ছাড়া আর কিছুই নয়। অপরাধী সত্তা ও নাৎসিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে গোষ্ঠীটি জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায়।  

হামাস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, হামাস (ইসরায়েলের) সীমা লঙ্ঘনের বিষয়ে নীরব থাকার বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছে, যা এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বসতি নির্মাণকে অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং বলছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। পাশাপাশি দেশটি বলছে, এ পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং শান্তি প্রচেষ্টার অবমূল্যায়ন।  

একইভাবে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, আরব শান্তি উদ্যোগ এবং প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক রেজোলিউশন অনুযায়ী ফিলিস্তিনি জনগণের আশা দেওয়া, নিরাপদে তাদের বসবাসের অধিকার দেওয়া এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা করা প্রয়োজন।  

জার্মানি ইসরায়েলকে এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছে। দেশটি বলছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। দেশটির ফেডারেল ফরেন অফিস এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আমরা পশ্চিম তীরে আরও বসতি নির্মাণের পরিকল্পনার নিন্দা জানাই।  

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এসব পরিকল্পনা অবৈধ, হতাশাজনক এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনের বিপরীতে। গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স এইরেসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের প্রশাসন বসতি সম্প্রসারণের দৃঢ় বিরোধিতা করে। আমাদের বিবেচনা অনুযায়ী এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে জোরদার করে না, বরং দুর্বল করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।