ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

‘উত্তেজনা প্রশমনে’ ইসরায়েলকে মিত্রদের পরামর্শ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৪
‘উত্তেজনা প্রশমনে’ ইসরায়েলকে মিত্রদের পরামর্শ

সিরিয়ায় কনস্যুলেট অফিসে হামলার জবাবে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। অভাবনীয় এ হামলার পর ইসরায়েল কী করবে চূড়ান্ত হয়নি।

যদিও দখলদার দেশটি হুমকি দিয়ে আসছে, যখন উপযুক্ত সময় আসবে তখন প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

ইরানও এ হুমকির ধার ধারছে না। দেশটি বলছে, তাদের আক্রমণ সমস্ত লক্ষ্য অর্জন করেছে। আপাতত আর হামলা চালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য নেই। তবে যদি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো হামলা হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই পরবর্তী আক্রমণ আরও বড় হবে।

দুই দেশের হুমকি পাল্টা হুমকিতে বেকায়দায় পশ্চিমা বিশ্ব, তথা ইসরায়েলি মিত্ররা। তারা মধ্যপ্রাচ্যে ‘ভয়ানক’ কিছু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। সেই আশঙ্কা থেকেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে স্থির থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, কার্যত পুরো বিশ্ব এখন ইসরায়েলের দিকে তাকিয়ে আছে, হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি কি করে সেটি দেখতে। কিন্তু মিত্ররা ইসরায়েলকে উত্তেজনা প্রশমনের পরামর্শ দিচ্ছে।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েল ‘রক্ষামূলকভাবে জিতেছে’। তবে যাতে এ অঞ্চলে উত্তেজনা না বাড়ে, সে আশাও করছেন তিনি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইসরায়েলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। উত্তেজনা এড়াতে সম্ভাব্য সবকিছু ফ্রান্স করবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব লর্ড ক্যামেরন ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছেন। মিত্র দেশটিকে মাথা খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বিবিসিকে ক্যামেরন বলেন, ইরানকে প্রতিক্রিয়া জানানো ইসরায়েলের জন্য ‘পুরোপুরি ন্যায়সঙ্গত’। তবে তাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। হৃদয় নয় বরং বুদ্ধি দিয়ে সমস্ত কিছু চিন্তা করতে হবে ইসরায়েলকে।

এর আগে ইসরায়েলের সবচেয়ে কাছের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইরানে হামলা চালালে তারা বন্ধুদের ‘সমর্থন দেবে না’। কথাটি বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন খোদ।

তিনি বলেন, ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল যদি ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে তবে সেই কাজে সাহায্য করবে না ওয়াশিংটন।

ইসরায়েলের ইরানি হামলা চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন বাইডেন। এ সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিরও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এটাও জানান, ইরানি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো আক্রমণাত্মক অভিযানে অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র এবং এই ধরনের কোনো অভিযানকে সমর্থনও করবে না।

দখলদার দেশের জন্য সহমর্মিতা দেখিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। ইসরায়েলের ওপর ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দাও করেন তিনি। একইসঙ্গে বলেন, ইরানের পদক্ষেপগুলো সমগ্র অঞ্চল এবং বিশ্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে, ঠিক যেমন রাশিয়ার পদক্ষেপগুলো একটি বৃহত্তর সংঘাতের হুমকি দিচ্ছে এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সুস্পষ্ট সহযোগিতাকে অবশ্যই বিশ্বের কাছ থেকে একটি দৃঢ় ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় তেহরানের কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এ ঘটনায় একাধিক ইরানি কমান্ডার নিহত হন। এরপরই প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে ইরান। গত শনিবার রাতে নিজ ভূখণ্ড থেকে প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালায় দেশটি। ইসরায়েলের দিকে তিনশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।