ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

উজবেকিস্তানে ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়া

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
উজবেকিস্তানে ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়া

ঢাকা: উজবেকিস্তানে একটি ক্ষুদ্রপারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে উজবেকিস্তান ও রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক উজবেকিস্তান সফরকালে দেশটিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক আন্তঃসরকারি চুক্তির কার্য পরিসর বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়।

পরিবর্তিত চুক্তির অধীনে, উজবেকিস্তানে ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রায় একই সময় রসাটমের প্রকৌশল শাখা এতমস্ত্রয়এক্সপোর্ট এবং উজবেকিস্তান পারমাণবিক শক্তি এজেন্সির অধীনস্থ ডিরেক্টরেট ফর দ্য কন্সট্রাকশন অফ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টস উজবেকিস্তানে একটি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তি সই করেছে। রসাটসের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

উজবেকিস্তানের জিজাখ অঞ্চলে রুশ নকশায় নির্মিতব্য এই ক্ষুদ্র পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬টি ইউনিট থাকবে, যার প্রতিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫৫ মেগা-ওয়াট, অর্থাৎ মোট ক্ষমতা ৩৩০ মেগা-ওয়াট হবে। রসাটম প্রকল্পটির জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এর নির্মাণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে।

রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এটি তাদের প্রথম এক্সপোর্ট কন্ট্রাক্ট, যার মাধ্যমে পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে রসাটমের অবিসংবাদিত নেতৃত্ব নিশ্চিত হয়েছে। এটা কোনও প্রাথমিক চুক্তি নয়, চলতি গ্রীষ্মেই আমরা এর নির্মাণ কাজ শুরু করতে যাচ্ছি।

উঝাটমের পরিচালক আজিম আখমেদ খাজায়েভ জানান যে পূর্বাভাস অনুযায়ী উজবেকিস্তানে বিদ্যুতের চাহিদা ২০৫০ সাল নাগাদ প্রায় দ্বিগুণ হবে। তার মতে, দেশটির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন স্থিতিশীল রাখতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অতিরিক্ত বেইজ-লোড এনার্জি উৎসের প্রাপ্তি নিশ্চিত করা জরুরি।

জিজাখ অঞ্চলে নির্মিতব্য পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে সর্বাধুনিক রুশ আরআইটিএম-২০০এন রিয়্যাক্টর ব্যবহৃত হবে। স্থলভাগে স্থাপনের জন্য এটিতে উদ্ভাবনী ম্যারিন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। এর তাপ উৎপাদন ক্ষমতা ১৯০ মেগা-ওয়াট, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫৫ মেগা-ওয়াট এবং এর জীবনকাল ৬০ বছর পর্যন্ত।
আরআইটিএম-২০০এন রিয়্যাক্টর গুলো অত্যন্ত প্রতিকূল আর্কটিক অঞ্চলে অবস্থিত আধুনিক রুশ আইসব্রেকার গুলোতে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইসব্রেকার গুলোর জন্য ১০টি এজাতীয় রিয়্যাক্টর নির্মাণ করা হয়েছে।

আরআইটিএম-২০০এন রিয়্যাক্টর ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলো অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক এবং এর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক বেশি কার্যকরি। এগুলোতে সক্রিয় ও স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সুরক্ষা ব্যুহর সমাবেশের মাধ্যমে কোনও দুর্ঘটনার সম্ভাবনাকে প্রায় শুন্যের পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

ক্ষুদ্র পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলোর অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে, যেমন এর নির্মাণ কাল অনেক কম এবং প্রয়োজন অনুসারে এর উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে সারা বিশ্বেই এ জাতীয় রিয়্যাক্টর গুলোর চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৫০টি এ জাতীয় প্রকল্প নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে, ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে শুধুমাত্র রাশিয়ারই মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
এসকে/এমএম
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।