যেসব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও নারীদের নিয়োগ দেয় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্থানের তালেবান সরকার।
কিছু এনজিও কর্মী সঠিকভাবে হিজাব পরিধান না করায় দুই বছর আগে দেওয়া এক নির্দেশনায় এনজিওগুলোকে নারী কর্মীদের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল তার ধারাবাহিকতায় এই সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানানো সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
রবিবার প্রকাশিত এক চিঠিতে দেশটির অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যক্রম নিবন্ধন, সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে। তালেবান নিয়ন্ত্রণাধীন নয় এমন সব প্রতিষ্ঠানে নারীদের কর্মসংস্থান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ অমান্য করলে সেই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং লাইসেন্স উভয়ই বাতিল করা হবে।
জাতিসংঘ তালেবান সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তারা বলছে, গত দুই বছরে আফগান নারীদের সুযোগ-সুবিধা ব্যাপকভাবে সংকুচিত হয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেনসিয়া সোতো নিনো-মার্টিনেজ বলেছেন, এটি আমাদের জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা প্রদানে বড় বাধা তৈরি করবে। এখানে অর্ধেক জনসংখ্যার অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে, যারা ইতিমধ্যে দারিদ্র্য এবং মানবিক সংকটে ভুগছে।
এনজিওগুলোর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণে এটি তালেবানের সর্বশেষ পদক্ষেপ। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, তালেবানের নৈতিকতা পুলিশ নারী ও পুরুষ উভয় মানবিক কর্মীর কাজ বাধাগ্রস্ত করছে। ত্রাণ কার্যক্রম চালানো সত্ত্বেও এই বাধাগুলো বাড়ছে।
তালেবান দাবি করেছে, তারা এনজিওগুলোর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে না। তবে, তারা ইতিমধ্যে নারীদের বেশিরভাগ চাকরি, শিক্ষা এবং পাবলিক স্থানে উপস্থিতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ষষ্ঠ শ্রেণির পর নারীদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে।
সম্প্রতি আরেকটি নির্দেশনায় তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা জানিয়েছেন, কোনো ভবনে এমন জানালা থাকা যাবে না, যা দিয়ে নারীদের বসা বা দাঁড়ানোর জায়গা দেখা যায়। নতুন ভবন ছাড়াও পুরনো ভবনগুলোতেও এই নিয়ম প্রযোজ্য। জানালাগুলো রান্নাঘর বা উঠানের দিকে মুখ করে থাকলে তা ঢেকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই সব বিধিনিষেধ আফগানিস্তানে নারী অধিকার ও জীবনমানকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: সিএনএন
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৫
এমএম