ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বয়স্কদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সালসা নাচ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১০
বয়স্কদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সালসা নাচ!

ওয়াশিংটন: শিকাগোর ইলিনয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক নতুন একটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন শুরু করেছেন। গবেষণার বিষয়বস্তু? সালসা নাচ লাতিন আমেরিকার বয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিনা তা জানা।

বিশেষ করে যে সব বয়স্ক লোকজনের চলাফেরা করতে কষ্ট হয়, যাঁরা অনেক বেশি প্রতিবন্ধীতার ঝূঁকির মধ্যে আছেন, তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এ গবেষণা করা হচ্ছে।     

গতিবিদ্যা ও পুষ্টিতত্ত্বের সহকারী অধ্যাপক ডেভিড জেভিয়ার মার্কোস এ গবেষণার জন্য ১৩ জন লাতিন আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবীকে বেছে নিয়েছেন। এদের প্রত্যেকেরই বয়স কমপক্ষে ৫৫ বছর বা তারও বেশি এবং গত একবছরে তাঁরা খুব কম বা কোন ব্যায়ামই করেননি। এঁদেরকে তিনি ১২ সপ্তাহ মেয়াদী একটি নাচের কাশে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এখানে তাঁদেরকে মারেংগেই, চা চা, বাচাতা ও সালসা নাচের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

মার্কোসের আশা, উপভোগ্য এ শারীরিক কসরতটি তাঁরা আয়ত্ব করবেন আর এর মধ্য দিয়ে তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে।

তিনি বলেন, “এটা লাতিনোদের জন্য সংস্কৃতিগতভাবে যুৎসই একটি শারীরিক কসরত। এঁদের অনেকেই পারিবারিক অনুষ্ঠান বা অন্যান্য উৎসবে এ নাচ করতে করতেই বড় হয়েছেন। তবে অনেকেই এখন আর এ সুযোগ পাচ্ছেননা। ”

মার্কোসের গবেষণা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাঁর গবেষণায় অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবীরা দক্ষিণ শিকাগো/ইস্ট সাইড/হেগেউইচ/দক্ষিণ ডেরিং এলাকার অধিবাসী। এসব এলাকার বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫ শতাংশই ল্যাটিন আমেরিকান আর এখানে ব্যায়ামের জন্য হাঁটাচলা করা তাঁদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষ করে শীতকালে।

প্রাথমিকভাবে মার্কোস তাঁর গবেষণায় ৪৫ জন অংশগ্রহণকারীকে আকর্ষিত করেন। তবে শুধুমাত্র তাঁদেরকেই এ গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয় যাঁরা তুলনামূলকভাবে নিস্ক্রিয় এবং কম চলাফেরা করেন। যে ১৩ জন এ গবেষণার জন্য নির্বাচিত হন তাঁদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই নারী।  

হামবোল্ড ভিত্তিক সালসা নাচের প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মিগুয়েল মেন্দেজের ১৮ বছর ধরে নাচ শিখিয়ে আসছেন। সপ্তাহে দুদিন এক ঘণ্টার এ নাচের কাসে কি ধরনের নাচ শেখানো হবে তার মূল পরামর্শদাতা তিনি।   মার্কোস এবং মেন্দেজ যৌথভাবে ৪৫ পৃষ্ঠার একটি বই ও লিখে ফেলেছেন। এতে অংশগ্রহণকারীদেরকে যে চার ধরনের নাচ শেখানো হয় তার সবকটি ধাপ দেখানো আছে।

এ কর্মসূচীর নাম দিয়েছেন তাঁরা ‘বালামোস’। স্প্যানিশ এ শব্দটির বাংলা অর্থ ‘আমরা নাচি’ যা মূলত ‘ব্যালান্স এন্ড অ্যাকটিভিটি ইন লাতিনোস, অ্যাড্রেসিং মোবালিটি ইন ওল্ডার অ্যাডাল্টস’ শব্দগুলির আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি।

এদিকে গবেষণার চূড়ান্ত তথ্য এখনও সংকলন ও বিশ্লেষণ করা না হলেও প্রাথমিক ফলাফলই তাঁকে চমৎকৃত করেছে বলে মার্কোস জানান।
তিনি বলেন, “শারীরিক সক্ষমতার উন্নতি হচ্ছে কিনা তা দিয়ে এঁদের অধিকাংশেরই বিশেষ কিছু যায় আসেনা। তবে তাঁরা আশা করেন এটি তাঁদের দৈনন্দিন কাজে সহায়তা করবে। তাঁরা আগের মতো তাড়াতাড়ি কান্ত হননা। শারীরিক ও মানসিকভাবে তাঁরা আগের চেয়ে আরো বেশি সক্ষম ও ভাল অনুভব করছেন। এঁদের অনেকে বলেন, নিজের সম্পর্কে তাঁরা এখন অনেক ভালো অনুভব করছেন এবং তাঁদের বিশ্বাস তাঁরা আরো বেশি অর্জন করতে সক্ষম। ”

মার্কোস আশা করছেন এ গবেষণার ফলে ডায়াবেটিস, হৃৎরোগের ঝুঁকি ও মাত্রাতিরিক্ত স্থূলতা কমাতে নাচ সাহায্য করে কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।

তিনি বলেন, “লাতিনোদের মধ্যে এমন কোন জৈবিক বা শারীরিক বিশেষত্ব নেই যার জন্য নাচ শুধুমাত্র তাঁদের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেই কাজে লাগবে। নাচ সবার স্বাস্থ্যের জন্য সমানভাবে উপকারী। ”

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩:২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১০


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।