ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সন্ত্রাস নির্মূলে প্যারিসে এককাতারে ৪৪ বিশ্বনেতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫
সন্ত্রাস নির্মূলে প্যারিসে এককাতারে ৪৪ বিশ্বনেতা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: শান্তি প্রতিষ্ঠার মন্ত্রে সন্ত্রাস নির্মূলের অঙ্গীকারে প্যারিসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটলেন বিশ্বের ৪৪ জন নেতা। সেই কাতারে ছিলেন ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস থেকে শুরু করে খোদ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও।



রোববার (১১ জানুয়ারি) প্যারিসে ৪৪ বিশ্বনেতার অংশগ্রহণে সন্ত্রাসবিরোধী এ মিছিল ও সংহতি সমাবেশে ১০ লাখোধিক মানুষ অংশ নিলেও পুরো ফ্রান্সজুড়ে রাস্তায় নামে সাইত্রিশ লাখ মানুষ। ‍আর ফরাসি নাগরিকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এমন সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ হয় বেশ কিছু বিদেশি শহরেও।

সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ফ্রান্সের ইতিহাসে এতো বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণে এ ধরনের মিছিল ও সমাবেশ এর আগে কখনোই হয়নি।

সমাবেশে অংশ নেওয়া প্রায় প্রত্যেকের হাতে ছিল ফ্রান্সের পতাকা ও প্ল্যাকার্ড। কারও কারও প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আমিই শার্লে’, ‘আমিই পুলিশ’, ‘আমিই ইহুদী’। মতপ্রকাশের প্রতীক হিসেবে অনেকের হাতে কলমের প্রতিকৃতি দেখা যায়।

বিশাল মিছিলের সামনের সারিতেই বিশ্বনেতাদের সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদকে দেখা যায়। সমাবেশ শুরু করার সময় লাখ লাখ মানুষের এই অংশগ্রহণ দেখে ওলাঁদ অভিভূত হয়ে বলেন, প্যারিস আজ হয়ে উঠেছে পৃথিবীর রাজধানী।

তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং ফরাসি নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যা ক্লদ জঁকার, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনিস সামারাস, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজোয়, ড্যানিশ প্রধানমন্ত্রী হেল থর্নিং স্মিট, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাউদতোগলু, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ দ্বিতীয়, জর্ডানের রাণী রানিয়া, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার, ফিলিস্তিন্তি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রমুখ।

প্যারিস ছাড়াও জার্মানির বার্লিন, স্পেনের মাদ্রিদ, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি ও কানাডার মন্ট্রিলে এই সমাবেশের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মিলিত হয় হাজারো মানুষ।

৭ জানুয়ারি সকালে শার্লে এবদো কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে প্রধান সম্পাদকসহ আটজন কার্টুনিস্ট, দু’জন পুলিশ সদস্য ও অপর দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে বন্দুকধারীরা। পরের দিন ৮ জানুয়ারি একটি ইহুদী সুপারমার্কেটে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় আরও এক নারী পুলিশকে।

হামলার জন্য শেরিফ (৩২) ও সাইদ কাউয়াচি (৩৪) নামে দুইভাইকে সন্দেহভাজন বলে নিশ্চিত করে ফরাসি গোয়েন্দা সূত্রগুলো। এ দু’জনের মধ্যে সাঈদ কাউয়াচি ইয়েমেনি আল-কায়েদার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য বলে জানান পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা। সাইদের সঙ্গে ইয়েমেনি আল-কায়েদার সংশ্লিষ্টতার খবর নিশ্চিত করে সানার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও। ইয়েমেনি গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বলা হয়, ৩৪ বছর বয়সী সাঈদ ২০১১ সালে ইয়েমেনে আল-কায়েদার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন।

হামলার পর দু’দিন ধরে ওই দুই সন্দেহভাজনকে ধাওয়া করে ফরাসি নিরাপত্তা বাহিনী। শেষ পর্যন্ত ৯ জানুয়ারি বিকেলে প্যারিসের উত্তরাঞ্চলের একটি গুদামঘরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হন দুই ভাই।

বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।