ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নেমতসফ হত্যা: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৫
নেমতসফ হত্যা: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির কথা মাঝে মধ্যেই মানবসভ্যতায় উঠে এলেও হুবহু পুনরাবৃত্তি খুব একটা দেখা যায় না। তবে এবার রাশিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী বরিস নেমতসভের খুনের ঘটনা যেন হুবহু পুনরাবৃত্তি করলো আগের একটি ঘটনার।



২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এক বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছেন রাশিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাধর ও দক্ষ বিরোধীদলীয় নেতা বরিস নেমতসভ। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে বড় সমালোচক ছিলেন তিনি। পুতিনের বিকল্প হিসেবেও ভাবা হচ্ছিলো তাকে। একইভাবে ১৯৩৪ সালের ১ ডিসেম্বর লেলিনগ্রাদে এক বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হন সার্জেই কিরোভ। এই বলশেভিক নেতা নিজেকে জোসেফ স্টালিনের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

১৯৩৪ সালের হত্যাকাণ্ডে স্টালিনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রত্যাখ্যাত হয়। এবারো বরিসের হত্যাকাণ্ডে ক্রেমলিন বেশ দ্রুতই পুতিনের সম্পৃক্ততার সন্দেহ উড়িয়ে দিয়েছে।

সার্জেই কিরোভের হত্যার ঘটনার পর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন হিটলারের আগ্রাসনে জড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এবং চরম মূল্য দিতে হয়। এবারো বরিসের হত্যাকাণ্ডের বেশ আগে থেকেই ইউক্রেন সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর বেশিরভাগ দেশ, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো বেশ নাখোশ থাকলেও, দিন দিন তার মাত্রা বাড়ছেই। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে রাশিয়ার ওপর। এর মাঝে সবচেয়ে বিপজ্জনক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা, যার ফলাফল আরো কয়েক প্রজন্ম ধরেই রাশিয়াকে ভোগ করতে হবে বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা।

তবে শুধুমাত্র কিরোভ কিংবা নেমতসভই নন, এর আগেও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। ১৯২০ সালে লেনিন তার সমসাময়িক বিরোধীদলীয় নেতাদের বিভিন্ন সেনা ক্যাম্পে প্রেরণ করে হত্যা করেন। রাশিয়াতে ১৯২০ সালের এই হত্যাকাণ্ডগুলোই দেশটিতে প্রথম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়।

স্টালিনের সময় সার্জেই কিরোভের হত্যাকাণ্ডের অনুসন্ধান আরো বড় অন্যায়ের জন্ম দেয়। হত্যার তদন্তে দোষী সাব্যস্ত করা হয় বলশেভিক পার্টির বেশ কয়েকজন নেতাকে। হত্যার দায় মাথায় নিয়ে মৃত্যুদণ্ডকেই জীবনের পরিণতি হিসেবে তাদের মেনে নিতে হয়। আর এ কারণেই প্রশ্ন উঠছে, বরিস নেমতসভের খুনের ঘটনায় এরপর কি ঘটতে যাচ্ছে। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে শুধু এখন তদন্তে নেমতসভের দলের নেতাদেরই দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাকি আছে।

পুতিনের ১৫ বছরের শাসনামলে নেমতসভই প্রথম ব্যক্তি, যিনি বর্তমান প্রেসিডেন্টর দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিভিন্ন ভবন ও ২০টি প্রাসাদ নির্মাণ এবং সংস্কারে অন্তত ৭ লক্ষ ডলারের দুর্নীতি করেছেন পুতিন। এছাড়া ইয়ট, প্লেন ক্রয় এবং ৬০ হাজার কর্মীর সমন্বয়ে ক্রেমলিন সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিচালনা এবং প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বাৎসরিক বাজেটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আরো অন্তত ২.৪১ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতি করেছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।