ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

প্যাটেল আন্দোলন

গুজরাটে নিহত ৮, কারফিউ, সেনা মোতায়েন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
গুজরাটে নিহত ৮, কারফিউ, সেনা মোতায়েন ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: কোটা অধিকারের দাবিতে প্যাটেল সম্প্রদায়ের আন্দোলনকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গুজরাট। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এক পুলিশসহ এ পর্যন্ত মারা গেছেন আটজন।



পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডাকা হয়েছে সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যেই সংঘাতে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে ফ্ল্যাগ মার্চ করেছে আধাসামরিক সেনা সদস্যরা।

নিহত আটজনের মধ্যে ৫জন মারা যান গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদে। অপর দুই জন মারা যান গুজরাটের উত্তরাঞ্চলীয় পালানপুরে। আর বুধবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়।

অগ্নিসংযোগ এবং অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ায় রাজধানী আহমেদাবাদ ও শিল্পনগরী সুরাটসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয়েছে কারফিউ।

এ সময় প্রায় শতাধিক বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া রাজ্য সরকারের মন্ত্রী এবং কয়েকজন বিজেপি সংসদ সদস্যের বাড়িঘরেও আগুন দেওয়া হয় বলে খবরে বলা হয়েছে।

গুজরাটের শক্তিশালী পতিদর বা প্যাটেল সম্প্রদায়ের কোটা অধিকার দাবির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ২২ বছর বয়সী তরুণ হার্দিক প্যাটেল।

অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মতোই সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে প্যাটেলদের জন্য কোটা সুবিধা দাবি করছেন তিনি।

তবে মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেল জানিয়েছেন, ৫০ শতাংশ কোটা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গুজরাটে আর কাউকে কোটা সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারের এই অবস্থানের প্রতিবাদে রাজধানী আহমেদাবাদে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) ‘মহাসম্মেলন’ আহ্বান করেন হার্দিক।

এতে যোগ দেন প্যাটেল সম্প্রদায়ের প্রায় ৫লাখ মানুষ।

সমাবেশ থেকে হার্দিক রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে হুমকি দিয়ে বলেন, যদি প্যাটেলদের অবহেলা করা হয় তবে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গুজরাটে আর পদ্মফুল ফুটবে না।
এরপর অনশন বসেন তিনি। ঘোষণা দেন ৪৮ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলকে অনশনস্থলে এসে দাবিপত্র নিয়ে যেতে হবে।

দিনের শেষে অনশনস্থল থেকে পুলিশ হার্দিক প্যাটেলকে আটক করে নিয়ে যায়। এর পরপরই ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। হার্দিককে ছেড়ে দেওয়া হলেও সহিংসতা থামেনি।

এর মধ্যেই বুধবার গুজরাটে ‘বন্ধ’ ডাকেন হার্দিক।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতোমধ্যেই ৫হাজার আধাসামরিক সেনা মোতায়েন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।

এদিকে এ পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যিনি নিজেও একজন গুজরাটি।

সহিংসতার মাধ্যমে ভালো কিছু সম্ভব নয় উল্লেখ করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গুজরাটের ৬ কোটি ৩০ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ১২-১৫ শতাংশ মানুষ প্যাটেল সম্প্রদায়ের। দীর্ঘদিন থেকেই বিজেপির ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত তারা। কিন্তু কোটা সংরক্ষণের দাবিতে রাজ্যের বিজেপি সরকারের সঙ্গে ইদানীং তাদের দূরত্বের সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫/০৫৫৭ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৫
কেএইচ/এমএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।