ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ক্যালিফোর্নিয়ায় হামলা

মিলছে না কোনো প্রশ্নের উত্তর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৫
মিলছে না কোনো প্রশ্নের উত্তর ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালফোর্নিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় পুলিশি অভিযানে নিহত হয়েছেন দুই সন্দেহভাজন সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক (২৮) ও তাসফিন মালিক (২৭)। বুধবার (০২ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলের এ হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

এছাড়া আহত হন আরও অন্তত ১৭ জন।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, হামলার কারণ অনুসন্ধানে এখনও অন্ধকারে তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বিস্ফোরক ডিভাইস উদ্ধার করেছে পুলিশ। এগুলো নিস্ক্রিয়ও করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের কাছে পয়েন্ট ২২৩ ক্যালিবারের অ্যাসল্ট রাইফেল ও হ্যান্ডগান পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

কেন এ বন্দুক হামলা?
বন্দুক হামলার কারণ সম্পর্কে তদন্তকারীরা এখনও অন্ধকারে থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, সৈয়দ ফারুক ও তাসফিন মালিক ছাড়া আর কেউ এর সঙ্গে জড়িত নন। এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা নয়’ বলেও উড়িয়ে দিতে পারছে না এফবিআই। কর্মস্থল সংক্রান্ত বা অন্য কোনো দ্বন্দ্বও গুলি চালানোদের তাড়িত করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সন্দেহভাজনদের নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক
যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সৈয়দ ফারুক চলতি বছর সৌদি আরব সফর করেন। সফর শেষে তিনি স্ত্রীসহ দেশে ফেরেন বলে জানিয়েছেন তার সহকর্মী প্যাট্রিক বাকারি। প্যাট্রিকও বুধবারের হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে ফারুক যখন গুলি চালান, তখন তিনি ছিলেন বাথরুমে।

প্যাট্রিক জানিয়েছেন, বসন্তকালে ফারুক এক মাসের জন্য সৌদি আরব যান। সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। ফারুকের স্ত্রী একজন ফার্মাসিস্ট ছিলেন এবং বিয়ের পর বছর না ঘুরতেই তাদের একটি সন্তানও হয়।

পুলিশ বলছে, হামলায় ফারুককে সঙ্গ দেওয়া তাসফিন মালিকই তার স্ত্রী।

কিভাবে ঘটলো?
প্যাট্রিক জানিয়েছেন, ঘটনার কিছু আগে একই টেবিলে বসেছিলেন তিনি ও ফারুক। হলিডে পার্টিতে যোগ দিতে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। গ্রুপ ছবি তোলার আগে খানিকটা আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন সবাই। হঠাৎ ফারুক গায়েব হয়ে যান। তবে তিনি যে চেয়ারে বসেছিলেন, সেখানে তার জ্যাকেট রয়ে যায়। এ সময় প্যাট্রিক বাথরুমে যান এবং আচমকা বিস্ফোরণের আওয়াজ পান।

তিনি বলেন, বৃষ্টির মতো স্রাপ্নেল ছুটে আসছিলো। আমরা সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শুয়ে পড়লাম।

পাঁচ মিনিট ধরে গুলি চালানো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, যখন উঠে আয়নার দিকে তাকালাম, বুঝতে পারলাম, আমার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। আমার শরীর, মুখ ও হাতে আঘাত লেগেছে। যদি সে সময় বাথরুমে না যেতাম, তাহলে মৃতদের মধ্যে হয়তো আমিও থাকতাম।

সন্দেহভাজনদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া
সন্দেহভাজন ফারুক বুধবার স্থানীয় সময় সকালে তার শিশুকন্যাকে মায়ের কাছে রেখে যান। এ সময় তিনি তার মাকে জানান, চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন তারা। এ তথ্য ফারুকের বোন-জামাই ফারহান খানের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক হুসাম আয়লৌশ।

মেয়েকে রেখে যাওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ফারুক দম্পতির ফেরার কোনো লক্ষণ না দেখে খানিকটা বিচলিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তারওপর টেলিভিশনে গুলির ঘটনার খবর শুনে তারা আরও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।

আয়লৌশ জানান, ফারুক পরিবেশ পরিদর্শক হিসেবে কাউন্টির স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন এবং কিছুদিনের জন্য ইনল্যান্ড রেজিওনাল সেন্টারে কাজ করেছেন।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ফারুকের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

ফারুকের ব্যাপারে সহকর্মীদের মন্তব্য
প্যাট্রিক বাকারি জানিয়েছেন, তার সহকর্মী ফারুক ছিলেন গম্ভীর প্রকৃতির ও সবসময়ই দায়িত্ব পালনে সচেতন। তাকে কখনো কোনো অসংলগ্ন আচরণ করতে দেখেননি সহকর্মীরা। এমনকি তিনি কোনো রাজনৈতিক আলোচনায়ও অংশ নিতেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৫
আরএইচ

** পুলিশি অভিযানে নিহত দুই সন্দেহভাজনের পরিচয় শনাক্ত

** ২০১৫তে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫৫ বন্দুকহামলা, নিহত ১২ হাজার
** ক্যালিফোর্নিয়ায় হামলার ঘটনায় দুই সন্দেহভাজন নিহত
** ক্যালিফোর্নিয়ায় গুলি, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪
** ক্যালিফোর্নিয়ায় গুলিতে নিহত ১২
** ভবনে আটকা পড়েছে অনেকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।