ঢাকা: চলমান অর্থনৈতিক মন্দাসহ বিভিন্ন সমস্যায় চলতি বছর বিশ্বে বেকারত্বের হার আরও বেড়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শ্রম বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড স্যোশাল আউটলুক- ট্রেন্ডস ২০১৬ (ডব্লিউইএসও)’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগামী দুই বছর উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইউরোপে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ফলে বেকারত্বের হার প্রকট আকার ধারণ না করলেও চীন, ব্রাজিল ও রাশিয়ায় কর্মহীন লোকের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাবে। আর এ ধরনের অসম কর্মসংস্থানের কারণে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সম্প্রসারণ থমকে যাবে। যা সামাজিক অস্থিতিশীলতাকে উসকে দেবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর বিশ্বে মোট বেকার লোকের সংখ্যা ১৯ কোটি ৯০ লাখে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। ২০১৭ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। আর ২০১৯ সাল নাগাদ তা ২১ কোটি ছাড়াবে।
আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, ২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা শুরুর পর ৬ কোটি মানুষ চাকরি হারায়। এক দশক ধরে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এর অন্যতম কারণ, উদীয়মান দেশগুলোয় অর্থনীতির শ্লথগতি ও ভোগ্যপণ্যের দরপতন। গত বছর বিশ্বে বেকারত্বের সংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ৭০ লাখ। চলতি বছর এ সংখ্যা যোগ হবে আরও অন্তত ২০ লাখ মানুষ। সব মিলিয়ে চলতি বছর বেকারত্বের হার থাকবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ দশকে ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বেকারত্বের হার বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি থাকবে। চীনে ২০১৬ সালে এ হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়াবে। আরব অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশেও বেকারত্ব বাড়বে।
এছাড়া বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭৪ শতাংশ ও সাব-সাহারা আফ্রিকান অঞ্চলের ৭০ শতাংশ লোক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত রয়েছেন।
গাই রাইডার বলেছেন, উপযুক্ত কাজের অভাবে অনানুষ্ঠানিক কাজে ঝুঁকে পড়ছে মানুষ। নিম্নমজুরির এ কাজগুলোয় উৎপাদনশীলতা ও সক্ষমতার বাছ-বিচার করা হয় না। সেই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন দরকার।
আইএলও’র গবেষণা বিভাগের পরিচালক রেয়মন্ড বলেছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে উদ্বায়ী মূলধনের প্রবাহ আর্থিক বাজারকে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নীতি-নির্ধারকদের এ বিষয়টায় আরও মনযোগী হওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
আরএইচ