ঢাকা: ব্রাজিলে ‘জিকা’ নামে এক ধরনের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। মশাবাহিত এ ভাইরাসে কোনো গর্ভবতী নারী আক্রান্ত হলে তার শিশু অস্বাভাবিক মাথার আকৃতি নিয়ে জন্মাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আক্রান্ত মায়ের গর্ভের শিশুটি জিকা ভাইরাসের মাধ্যমে মাইক্রোসেফালে নামে এক ধরনের নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডারে ভোগে। পরে শিশুটি ছোট আকৃতির মাথার খুলি এবং মস্তিষ্কে কিছু প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মায়।
১৯৪৭ সালে আফ্রিকায় প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। প্রায় সাত দশক পর এটির প্রাদুর্ভাব হলো ব্রাজিলে।
গত বছর গবেষকরা প্রাথমিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে সতর্কতা জিকা ভাইরাসের ওপর সতর্কতা দেন। এই প্রেক্ষিতে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গর্ভবতী মায়েদের মশার কামড় থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানায়।
সম্প্রতি ওই মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ পর্যন্ত ৪৯ শিশুর অস্বাভাবিক জন্ম হয়েছে, কিছু সময় পর আবার তাদের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয় শিশুর শরীরে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) গবেষকরা সতর্কতা আরও জোরদার করেন। সেখানকার কার্তিবা’র দ্য ফায়োক্রুজি বায়োমেডিকেল সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান দু’জন গর্ভবতী মায়ের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত করলে এ জোরালো সতর্কতা দেন তারা।
এদিকে, ইউনিভার্সিটি অব সাও পাওলো’র ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিকেল সায়েন্স’র গবেষক জিয়ান পেরন বলেন, আমরা গর্ভবতী ইঁদুরের শরীরে জিকা ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে দেখছি, ফলাফল কী দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, ইয়ালো ফিভার মসকিউটো এই ভাইরাস বহন করে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ইয়াডেস আয়জেপটি। এই মশার মাধ্যমে ডেঙ্গুও ছাড়ায়।
গত সপ্তাহে ইউএস সেন্টার ফর ডায়াবেটিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন গর্ভবতী মায়েদের ১৪ দেশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়। তার মধ্যে ব্রাজিল একটি।
জিকা ভাইরাস
মূলত মশার কামড়ে জিকা ভাইরাস ছড়ায়। এর ফলে জ্বর, চুলকানি, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জোড়ায় ব্যথা হয়। সাধারণত কয়েক দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত এ রোগে ভুগতে হয়। এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক উদ্ভাবন করা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৬
এটি/এইচএ/