ঢাকা: সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে মশাবাহিত ভাইরাস জিকা। এরইমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রাজিল, কলম্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশের অন্তঃস্বত্তারা।
এ নিয়ে শুধু দক্ষিণ আমেরিকা কিংবা উত্তর আমেরিকাতেই নয়, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসের আতঙ্ক। কয়েকটি দেশে বেশ কয়েকজন শিশুর মারা যাওয়ার খবরও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
কিন্তু কী করা? এখনও যে ঘাতক এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। শুধু হাহাকার ছাড়া কী-ই বা করার আছে! কিন্তু আশার বাণী নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি এই মশাবাহিত এ ভাইরাসের মহামারী রুখতে টিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, টিকা তৈরিতে এরইমধ্যে গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন প্রখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী গ্যারি কবিনগের। উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার একজন নেতৃত্বস্থানীয় বিজ্ঞানী তিনি।
যিনি কানাডার কুইবেক শহরের লাভাল ইউনিভার্সিটি ও কানাডার উইনিপেগের জাতীয় মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরির প্রধান প্যাথোজেন বিশেষজ্ঞ হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
একই সঙ্গে কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনেসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডেভিড উয়েনেরের সঙ্গেও। এছাড়া ইভোনিও ফার্মাসিউটিক্যালস ও দক্ষিণ কোরিয়ার জিনেওয়ান লাইফসায়েন্সের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন কবিনগের।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, জিকার প্রতিষেধক তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এরপর আগস্ট থেকে তা মানুষের ওপর প্রয়োগ করা শুরু হবে।
‘যদি তাতে সফল হওয়া যায়, তবে চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে সবার জন্য তা ছাড়া হবে,’ বলেন গ্যারি কবিনগের।
তিনি বলেন, প্রথমে এই মহামারি ভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। পরে এর প্রতিষেধক মানুষের কাজে লাগবে, যেটা হয়েছিল গায়েনায় ইবোলা ভাইরাসের ক্ষেত্রে।
তবে প্রতিষেধকটি কবে নাগাদ বাজারে পাওয়া সহজতর হবে সে বিষয়ে কিছুই জানাননি এই গবেষক।
২৮ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, জিকা ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির জন্য সম্ভাব্য দুই প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে-তাদের তৈরি প্রতিষেধক চলতি বছরের শেষের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা যাবে। তবে কয়েক বছরের মধ্যে তা সহজলভ্য হবে না।
এদিকে জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আমেরিকায় এ পর্যন্ত প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।
ওষুধ প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান ইনোভিও-এর প্রধান নির্বাহী জোসেফ কিম বলেন, চলতি বছরের মধ্যে এই প্রতিষেধক সবার জন্য সহজলভ্য করা কঠিন, তবে সম্ভব।
এ পর্যন্ত ২৩টি দেশ ও টেরিটরিজে জিকা ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে প্রকোপ দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, কলম্বিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে। কলম্বিয়ার ২১শ’ অন্তঃস্বত্তা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
মহামারী এ ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৬
এমএ/