ঢাকা: ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ’ বা ওয়ানএমডিবি সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। তদন্তের স্বার্থেই অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে।
এক যৌথ বিবৃতিতে সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পুলিশের জালিয়াত বিরোধী ইউনিট বলেছে, আমরা অবৈধ তহবিলের আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিগণিত হতে রাজি নই। এ কারণে বেশ কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছি আমরা। তদন্ত এগিয়ে নিতে আমরা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য চেয়েছি। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গেই কথা বলছি।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ ব্যাপারে সিঙ্গাপুর একযোগে কাজ করছে।
‘ওয়ানএমডিবি’ মালয়েশিয়ার সরকারের একটি কৌশলগত উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। বৈশ্বিক সম্পর্কোন্নয়ন ও সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে দেশের দীর্ঘ মেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ২০০৮ সালে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল তেরেঙ্গানু ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি (টিআইএ)। পরের বছর, ২০০৯ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ’।
আলোচিত-সমালোচিত ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি)’ বিতর্কের সৃষ্টি হয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলা হয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওয়ানএমডিবি ফান্ড থেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন রিংগিত (৫ হাজার ১৮৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা) জমা করা হয়েছে।
তবে শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। গত ২৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার অ্যাটির্ন জেনারেল মোহাম্মদ অ্যাপান্ডি আলিও এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নাজিব এক্ষেত্রে বেকসুর।
এদিকে, গত ২৯ জানুয়ারি সুইস অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল লবার এক বিবৃতিতে জানান, ২০১৫ সালেই সুইস কর্তৃপক্ষ ওয়ানএমডিবি ইস্যুতে একটি তদন্ত শুরু করে। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাপলার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির কিছু অর্থ মালয়েশিয়ার সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও নেতার সুইস অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে।
ওয়ানএমডিবি থেকে চার বিলিয়ন ডলার খোয়া গেছে বলেও ওই বিবৃতিতে দাবি করেন মাইকেল লবার। ৭৯.০৮ টাকায় এক ডলারের হিসাবে বাংলাদেশি টাকায় অংকটা দাঁড়ায় ৩১ হাজার ৬৩১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
** ‘ওয়ানএমডিবি’ থেকে খোয়া গেছে ৩১ হাজার কোটি টাকা!
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
আরএইচ