ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

প্রশান্ত মহাসাগরীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (টিপিপি) স্বাক্ষরিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৬
প্রশান্ত মহাসাগরীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (টিপিপি) স্বাক্ষরিত ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিশ্বের বৃহত্তম মুক্তবাজার গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে স্বাক্ষরিত হলো ‘ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি)’ বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতা চুক্তি।

বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ১২ দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

তবে এখনই চূড়ান্ত হচ্ছে না সবকিছু। জোটের সদস্যরা নিজ নিজ দেশে চুক্তিটি গ্রহণ করতে বা প্রত্যাখ্যান করতে দু’বছর করে সময় পেয়েছে।

চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ৪০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করবে এ জোট। জোটভুক্ত সদস্যরা হলো- যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রুনেই, চিলি, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম। এসব দেশে এখন থেকে সহযোগীদের পণ্য সাশ্রয়ী শুল্কে প্রবেশ করতে পারবে। সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের লগ্নি অধিক নিরাপদ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

টিপিপি চুক্তিতে সর্বপ্রথম স্বাক্ষর করেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান্ড্রিউ রোব। আর সর্বশেষ স্বাক্ষর করেন নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী টোড ম্যাকক্লে।

চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, বিশ্বের অগ্রবর্তী অর্থনীতিগুলোয় এ চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র এবার বিশেষ সুবিধা পাবে। টিপিপি চুক্তি আমেরিকাকে সমর্থন করে, কিন্তু চীনের মতো দেশগুলোকে সমর্থন করে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিশাল মুক্তবাজার সৃষ্টির ফলে প্রথমেই চাপে পড়বে চীন। একুশ শতকের বাজার ও বিনিয়োগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন ঘটাতে পারবে এখন এই জোট।

এরই মধ্যে জাপান তার বাজারে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড থেকে খাদ্যপণ্য প্রবেশের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার বাজারে সাশ্রয়ী শুল্কে জাপানে প্রস্তুত গাড়ি প্রবেশের সুযোগ দেবে বলে সম্মত হয়েছে। এক্ষেত্রে টিপিপিভুক্ত নয় এমন দেশ যেমন- চীন ও থাইল্যান্ডের পাশাপাশি টিপিপি ও ‘উত্তর আমেরিকা মুক্তবাজার চুক্তির (নাফটা)’ অন্তর্ভুক্ত দেশ যেমন- মেক্সিকো ও কানাডাও জাপানের মতো এতোটা সুযোগ পাবে না।

এদিকে, কানাডা দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের জন্য নিজের বাজার সহজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার আঁখ ও আঁখজাত পণ্য পাবে বিশেষ সুবিধা।

এছাড়া এ চুক্তিতে সরকার ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব নিরসনে বিশেষ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে চুক্তিবদ্ধ সরকারগুলো দেশীয় প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। সেই সঙ্গে ভিয়েতনাম, মেক্সিকো ও মালয়েশিয়ায় শ্রমমান উন্নয়নেরও শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে চুক্তিতে।

তবে যতোই ভালো দিক সামনে আনা হোক না কেন, টিপিপি চুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও নিউজিল্যান্ডসহ বাকি দেশগুলোয় গত কয়েক মাস ধরে সরব রয়েছেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মন্ত্রীরা যখন চুক্তি স্বাক্ষর করছেন, অকল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যবসায়িক জেলা তখন বিক্ষোভে মুখর। শুধু তাই নয় অকল্যান্ড হারবার ব্রিজে প্রবেশও বিঘ্নিত হয় এ সময়। পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন কয়েকজন বিক্ষোভকারী।

বিক্ষোভকারীদের ধারণা, এ চুক্তি জাতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পরিবর্তে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর পকেট ভারী করবে। এতে শ্রমিকদের জন্য কোনো সুসংবাদ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৬
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।