ঢাকা: মহাবিশ্বের অসংখ্য পরিবারের মতো আমাদের এ সৌরজগতও একটি পরিবার। এ পরিবারে গ্রহ-উপগ্রহ ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য মহাজাগতিক বস্তু, গ্রহাণুর উপস্থিতি।
এমন পরিস্থিতিতে আক্ষরিক অর্থেই ঘাম ঝরতে শুরু করে বিজ্ঞানীদের। সরকারগুলো পড়ে যায় বেকায়দায়। চেনা শত্রুকে মোকাবেলা যতোটা সহজ, তার চেয়েও অনেক বেশি কঠিন অচেনা-অজানা শক্তিধর জড় এ শত্রুদের। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্যই স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালের নিজের কিছু আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক মিসাইল রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।
তথ্যটি জানিয়েছেন রাশিয়ার মাকেয়েভ রকেট ডিজাইন ব্যুরোর শীর্ষ গবেষক সাবিত সাইতগারায়েভ।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রও একই বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে। তবে তাদের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) চাইছে, ধেয়ে আসা গ্রহাণুগুলোর দিক পরিবর্তন করে অন্যদিকে ঠেলে দিতে। কিন্তু রাশিয়া চাইছে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল স্পর্শ করার আগেই এগুলো ধ্বংস করে দিতে।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, গ্রহাণুর বা উল্কাপিণ্ডের আঘাতে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ডাইনোসররা। হয়তো কোনো একদিন মানবজাতিও এমন কোনো বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।
সাবিত সাইতগারায়েভ বলেছেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ২০ মিটার থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত ব্যাসের গ্রহাণুগুলোকে ধ্বংসের পরিকল্পনা করছি। এ ছোট গ্রহাণুগুলোও বড় ধরনের ক্ষতি করতে সক্ষম। আর এ ধরনের গ্রহাণু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একেবারে শেষ মুহূর্তে সনাক্ত হয়। কখনো কখনো তো তাদের ধেয়ে আসার ব্যাপারটা টেরই পাওয়া যায় না।
২০১৩ সালে রাশিয়ার শেলিয়াবিনস্ক এলাকার আকাশে ২০ মিটার ব্যাসের একটি গ্রহাণু বিস্ফোরিত হয়। তিন লাখ টন টিএনটি বা তার চেয়েও বেশি শক্তির বিস্ফোরণ ঘটায় এটি। এতে ওই এলাকার ভবনগুলোর জানলা-দরজার কাচ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়, আহত হন সহস্রাধিক মানুষ। পৃথিবীর কোনো মহাকাশ সংস্থাই গ্রহাণুটির ধেয়ে আসা সনাক্ত করতে পারেনি।
নাসার পরিচালক জেসন কেসলার বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত ধেয়ে আসা ছোট গ্রহাণুগুলোর এক শতাংশ মাত্র সনাক্ত করতে পারি আমরা। এগুলোর ব্যাস সর্বনিম্ন ৩০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। কাজেই বাইরে আরও অনেক গ্রহাণু আমাদের জন্য হুমকি হয়ে অপেক্ষা করছে, যেগুলো এখনও আমাদের চোখে ধরা পড়েনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
আরএইচ