ঢাকা: রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার উনিশ দিনের মাথায় অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার।
বুধবার দিল্লির হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে ছ’মাসের জন্য জামিন দিয়েছেন কানহাইয়াকে।
জামিনের শর্ত হিসেবে এই ছ’মাসে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশবিরোধী কার্যকলাপ রোধে কাজ করতে হবে।
বুধবার রায় ঘোষণা হয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যায়। বৃহস্পতিবার কানহাইয়া দিল্লির তিহার জেল থেকে মুক্তি পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তার আগে তাঁকে দশ হাজার টাকার জামানত দিতে হবে।
আদালতের রায়ে বলা হয়, কানহাইয়ার পারিবারিক সঙ্গতির কথা মাথায় রেখেই এই অঙ্ক ধার্য করা হল। তার জামিনদার হয়ে দাঁড়াতে হবে জেএনইউয়ের কোনও শিক্ষককে।
বিচারপতি প্রতিভা রানি তার রায়ে আরও বলেছেন, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ফলে কানহাইয়া সরাসরি দেশ-বিরোধী স্লোগান দেওয়া বা দেশ-বিরোধী কাজকর্মে যুক্ত ছিলেন কি না, নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ৯ ফেব্রুয়ারি জেএনইউ ক্যাম্পাসে যে ধরনের স্লোগান উঠেছে, তাকে বাক্স্বাধীনতার অধিকার বলে মেনে নেওয়া যায় না। বিচারপতির মতে, ছাত্রসমাজের একাংশের মধ্যে এক ধরণের বিষক্রিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে। তার প্রতিবিধানে ধাপে ধাপে চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। কানহাইয়ার ক্ষেত্রে তিনি প্রাথমিক ভাবে হালকা প্রতিষেধক দিতে চান বলেই শর্তসাপেক্ষে জামিন দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
কানহাইয়ার জামিনের ব্যাপারে আদালতের শর্ত হলো, জামিনে মুক্তথাকাকালীন কানহাইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বা অন্য কোথাও কোন সভায় অংশ নিতে পারবেন না। দেশবিরোধী কোনও কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকতে পারবেন না। তদন্তের কাজে তাঁকে সহায়তা করতে হবে। পুলিশ ডাকলেই হাজিরা দিতে হবে।
৯ ফেব্রুয়ারি আফজল গুরুর মৃত্যুদিবসে তার ফাঁসির বিরোধিতার করে জেএনইউতে একটি সভায় দেশবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কানহাইয়ার নামে। সভার আয়োজক হিসেবে উমর খালিদ এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য নামে আরও দুই ছাত্র পরে গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু কানহাইয়ার তরফে আদালতে বলা হয়েছে, ওই সভার আয়োজনে কানহাইয়া জড়িত ছিলেন না। তথাকথিত দেশবিরোধী স্লোগানও তিনি দেননি।
এদিকে কানহাইয়ার জামিনের ব্যাপারে দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, ‘‘শর্তসাপেক্ষ জামিনের অর্থই হল মামলায় সারবত্তা রয়েছে বলে মনে করছে আদালত। ’’ অন্য দিকে কানহাইয়ার আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেন, ‘রায় শুনে তিনি যথেষ্ট নিশ্চিন্ত। ’ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কানহাইয়ার মাও।
এদিকে কানহাইয়ার জামিনে মোদি সরকারও স্বস্তিতে বলে জানা গেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে। কারণ বিজেপিতেও অনেকে মনে করেন, কানহাইয়ার বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করেছে পুলিশ। যার জেরে ক্রমাগত কথা শুনতে হচ্ছে দলকে। কানহাইয়া ছাড়া পেলে বিষয়টি থিতিয়ে যাবে বলেই আশা করছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৬
আরআই