ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গ্রাফাইটে আবৃত বুধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
গ্রাফাইটে আবৃত বুধ

ঢাকা: মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। বিশেষ করে, সূর্যের যে পারিবারিক মণ্ডল, তা নিয়ে তো প্রতিমুহূর্তে মানুষের জানার আকাঙ্ক্ষা বেড়েই চলেছে।

বিজ্ঞানীরাও বসে নেই। প্রতিনিয়ত সৌরজগতের নানা তথ্য আবিষ্কার করে মানুষকে চমকে দিচ্ছেন তারা। এবার এ সৌরজগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ বুধকে নিয়ে এক চমকপ্রদ তথ্য উদ্ঘাটিত হলো।

সূর্যের খুব কাছের গ্রহ হলেও বুধ সাধারণত একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রহ। যেখানে অতিরিক্ত উত্তাপে গ্রহটির উজ্জ্বল হওয়ার কথা, সেখানে কেন এটি অন্ধকারাচ্ছন্ন, তা নিয়ে এতদিন প্রশ্নের শেষ ছিল না। এবার তারই একটি মোক্ষম জবাব খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

নাসার গবেষকরা বলছেন, বুধ আসলে অন্ধকারাচ্ছন্ন নয়। এর বাইরের দিকটা গ্রাফাইটের পুরু ও নিষ্প্রভ স্তর দিয়ে আবৃত বলেই আসলে এমন লাগে দেখতে। গ্রাফাইট কার্বনের ক্রিস্টাল গঠন, যা দিয়ে পেন্সিলের লিড তৈরি করা হয়। এতে একটি নিঃসঙ্গ ইলেক্ট্রন থাকায় অধাতব পদার্থ হওয়া সত্ত্বেও এটি বিদ্যুৎ পরিবাহী।

নাসার মারকারি (বুধ) মেসেঞ্জার স্পেসক্রাফটের পাঠানো তথ্য ও ছবি বিশ্লেষণ করেই বিজ্ঞানীরা এমনটা ভাবছেন। গবেষকদের ধারণা, আগ্নেয়গিরির অগ্যুৎপাতের কারণে স্তরটি অস্ফূট হয়ে যায়, যার কারণে বুধকে অন্ধকারাচ্ছন্ন দেখায়।

জার্নাল নেচার জিওসায়েন্সে এ সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। মারকারি মেসেঞ্জার স্পেসক্রাফটের পাঠানো তথ্য-উপাত্তগুলো বিশ্লেষণ করে গবেষণাপত্রটি প্রস্তুত করেছেন ‍যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অবস্থিত জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ফলিত পদার্থবিজ্ঞান গবেষণাগারের (এপিএল) প্যাট্রিক পেপলোভস্কি ও তার সহকর্মীরা।

তারা দেখেছেন, বুধের গাঢ় বা অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশগুলো অধিক কার্বন সমৃদ্ধ। গ্রহটির যৌবনে এটি বিশাল এক ‘ম্যাগমা’ মহাসাগরে আবৃত ছিল এবং এর পৃষ্ঠ উত্তপ্ত ছিল। গলিত বা অর্ধগলিত উত্তপ্ত পদার্থের মিশ্রণকে ম্যাগমা বলা হয়ে থাকে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ম্যাগমা মহাসাগরটি যখন ঠাণ্ডা হতে এবং বুধের খনিজ উপাদানগুলো ক্রিস্টাল গঠন পেতে শুরু করলো, তখন গ্রাফাইট বাদে বাকি পদার্থগুলো তরলের গর্ভে হারিয়ে যায়। আর এভাবেই গ্রহটিতে একটি গ্রাফাইট স্তরের সৃষ্টি হয়। কিন্তু পরে আগ্নেয়গিরির অগ্যুৎপাতসহ নানা ভৌগলিক প্রক্রিয়ায় স্তরটি নিষ্প্রভ বা অস্ফূট হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৬
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।