ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সুনামির সেই ক্ষত এখনো দগদগে জাপানে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৬
সুনামির সেই ক্ষত এখনো দগদগে জাপানে ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ১১ মার্চ ২০১১। টোকিও সময় দুপুর ২টা ৪৬ (বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা ৫৬)।

হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠল জাপানের উপকূল। ফুঁসে উঠল সাগর। স্বাভাবিক জীবনে হানা দিল বিভিষিকা। ঝরে গেল ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই ক্ষত এখনো দগদগে জাপানবাসীর মনে।

শুক্রবার (১১ মার্চ) জাপানবাসী স্মরণ করলেন ২০১১ সালের সেই বিভিষিকাময় দিনটিকে। ভূমিকম্প আঘাত হানার সময়টাতেই দেশজুড়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করে স্মরণ করা হলো সেদিন নিহত ও নিখোঁজ হওয়া হতভাগ্য মানুষগুলোকে। রাজধানী টোকিওতে সম্রাট আকিহিতো, সম্রাজ্ঞী মিচিকো ও প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে যোগ দিয়েছেন জাতীয় অনুষ্ঠানে।

ঠিক পাঁচ বছর আগে ১১ মার্চ স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৬ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল। এই প্রবল ঝাঁকুনিতে একদিকে যেমন ফুঁসে ওঠে সাগর, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমায় দাইইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল চেরনোবিল বিস্ফোরণের পরই বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয় হিসেবে দেখা হয় দাইইচি পারমাণবিক বিপর্যয়কে।

ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি স্থানীয় অধিবাসীকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় সরকার। পাঁচ বছর পর এখনো এই অধিবাসীদের বেশিরভাগই তাদের ঘরে ফিরতে পারেননি। এছাড়া এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

দাইইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেক্ট্রিক পাওয়ার ও জাপান সরকার এখন স্বল্প পরিসরে কেন্দ্রটি চালু করতে চাইছে। তবে দেশটির জনসাধারণ এ পরিকল্পনার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে, সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই দেশটির একটি আদালত আরো দু’টি চুল্লি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানির ওপরই দেশটির নির্ভরতা আরো বাড়াতে হচ্ছে।

দাইইচি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপর্যয়ের পাশাপাশি জাপানে মারাত্মক ক্ষতের চিহ্ন এঁকে দিয়েছিল ভূমিকম্পের প্রভাবে সৃষ্ট সুনামি। তোহোকু উপকূলে যেন জলের দেয়াল উঠে এসেছিল সেদিন। ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল শহরের পর শহর, গ্রামের পর গ্রাম। খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছিল হাজার মানুষ, গৃহপালিত পশু, গাছপাল আর স্থাপনা। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত সে এলাকাগুলোয় এখনো ক্ষতের চিহ্ন স্পষ্ট। স্বাভাবিক হয়নি সেসব এলাকার জনজীবন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৬
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।