ঢাকা: একদিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মাথার ওপর খাড়া ঝুলছে, অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ডিলেমা রৌসেফের মন্ত্রিপরিষদে মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) খবরটি জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টি বলছে, লুলা মন্ত্রী হলে প্রেসিডেন্ট ডিলেমা রৌসেফের দূর্বল হয়ে পড়া সরকার ব্যবস্থা আবার শক্তি ফিরে পাবে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ থেকে পূর্বসূরিকে বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রৌসেফ। মন্ত্রী হলে লুলাকে সরাসরি গ্রেফতার বা জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। সেই সঙ্গে আইনি কিছু ছাড়ও পাবেন তিনি। তবে পাকা রাজনীতিক রৌসেফ শুধু এ কারণেই লুলাকে মন্ত্রী বানাচ্ছেন না। এর সঙ্গে তার দূর্বল হয়ে পড়া সরকার ব্যবস্থারও অস্তিত্বের প্রশ্ন মিশে আছে। পোড় খাওয়া রাজনীতিক লুলা মন্ত্রী হলে ব্রাজিলে চলমান টালমাটাল পরিস্থিতি সামাল দেওয়া রৌসেফের জন্য আরো সহজ হবে বলে মনে করছেন দেশটির রাজনৈতিক বোদ্ধারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্রের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, লুলার সঙ্গে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সাক্ষাৎ করবেন রৌসেফ। তবে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ৯ মার্চ লুলার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ গঠন করেন সাও পাওলোর প্রসিকিউটররা। পরদিন, ১০ মার্চ সংবাদসম্মেলন করে তার গ্রেফতারও চান তারা।
লুলার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওএএস সমুদ্র তীরবর্তী তার বিলাসবহুল পেন্টহাউজটিতে ব্যাপক সংস্কারের কাজ করেছে। দাফতরিকভাবে পেন্টহাউজটির মালিকানার দালিলিক প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন লুলা।
এ ব্যাপারে ঘুরেফিরে ব্রাজিলের সবচেয়ে আলোচিত পেট্রোবাস কেলেঙ্কারির বিষয়টি উঠে আসছে। রাষ্ট্রীয় এ পেট্রোলিয়াম কোম্পানিতে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা এবং দেশটির বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ কয়েকজন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে।
এর আগে সাও পাওলো’র প্রসিকিউটররা ১৬ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ গঠন করেন। সে তালিকায় লুলার ছেলেও আছেন।
তবে লুলার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন তিনি।
এদিকে, পেট্রোবাস কেলেঙ্কারি ও কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মন্দার কবলে পড়া ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট ডিলেমা রৌসেফের সরকার প্রতি মুহূর্তে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, বাধার মুখে পড়ছে। তার পদত্যাগের দাবিতে কয়েক দফায় রাজপথেও নেমেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে নিজের উত্তরসূরি নির্বাচনে ডিলেমা রৌসেফকে মনোনয়ন দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৬
আরএইচ
** লুলার গ্রেপ্তার চান ব্রাজিলের প্রসিকিউটররা
** ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন