ঢাকা: পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ গ্রেট ব্যারিয়ার। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের উপকূল ঘেঁষে কোরাল সাগরে এটি অবস্থিত।
কোরাল, পলিপসসহ কোটি কোটি ক্ষুদ্র অর্গানিজম দিয়ে গঠিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ আসলে একক কোনো রিফ নয়। ২,৯০০টি রিফ আর ৯০০ দ্বীপের সমন্বয়ে এটি গঠিত। ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ রিফটি মহাশূন্য থেকেও দেখা যায়। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ রিফটি ক্ষয়ে যেতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল কোরাল ব্লিচিং টাস্কফোর্স।
সংস্থাটির দাবি, উত্তর কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস থেকে পাপুয়া নিউগিনি পর্যন্ত অংশের ৯৫ শতাংশ জায়গাই ঝুঁকিতে রয়েছে। এই অঞ্চলের ৫২০টি রিফের চারটি বাদে বাকিগুলোতে ক্ষয় শুরু হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আর এল-নিনোর প্রভাবে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ও উষ্ণতা বৃদ্ধিই মূলত প্রবালপ্রাচীর ক্ষয়ে যাওয়ার মূল কারণ। আর এর জন্য প্রত্যক্ষভাবে মানুষই দায়ী। কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাম্যাবস্থা ধরে রাখতে সাগর ৯৩ শতাংশ তাপ শোষণ করে থাকে। এছাড়া প্রবালের গায়ে রঙ চড়ানো জুওক্সানথেলি (zooxanthellae) শৈবালের ঘাটতি দেখা দিলেও তা ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। যদি খুব দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফেরে, তাহলে এ ক্ষয় পুষিয়ে উঠতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে কয়েক দশক লেগে যেতে পারে। আর যদি তা না হয়, তাহলে প্রবালের মৃত্যু ঘটতে পারে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রবালপ্রাচীরগুলোয় যেভাবে ক্ষয় শুরু হয়েছে, তা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অধ্যায়ই বলতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এখনই বলতে পারছেন না, এ ক্ষয় কবে নাগাদ পুষিয়ে উঠতে শুরু করবে। তবে বিজ্ঞানীরা সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ক্ষয়ে যাওয়া প্রবালগুলোর ৫০ শতাংশই মারা পড়তে শুরু করেছে।
ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড-এর অধ্যাপক জাস্টিন মার্টিন বলেছেন, আমরা এখন যা দেখছি, তা দ্ব্যর্থহীনভাবেই জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। প্যারিস সম্মেলনে সবাই একমত হয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। আর আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ পরিবর্তন সর্বপ্রথম আমাদের প্রবালপ্রাচীরগুলোকে আক্রমণ শুরু করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৬
আরএইচ