ঢাকা: মায়ানমারে প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়েছেন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নেত্রী অং সান সুচি’র ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত থিন কিয়াও।
বুধবার (৩০ মার্চ) রাজধানী নাইপিডোতে এক ঐতিহাসিক ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিনি শপথ নেন।
চলতি মাসের প্রথমদিকে মায়ানমারের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ৬৯ বছর বয়সী থিন কিয়াওয়ের নাম প্রস্তাব করা হয়। উচ্চকক্ষ ও সেনাব্লক থেকেও একটি করে নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে একজনকে বেছে নিতে ভোটাভুটি হয় পার্লামেন্টে। এতে ৬৫২ ভোটের মধ্যে ৩৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন থিন কিয়াও। আর এর মাধ্যমে অর্ধশত বছর পর মায়ানমার একজন বেসামরিক ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেল।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়া বাকি দুই প্রার্থী হলেন, এনএলডি নেতা হেনরি ভ্যান থিও ও সেনাব্লক সমর্থিত মাইন্ত সুই। তারা মায়ানমারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সংখ্যালঘু নেতা হেনরি ভ্যান থিও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এই প্রথম মায়ানমারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের একজন নেতাকে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পেতে চলেছে। আর এতদিন দেশটি শাসন করে আসা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও একজন ভাইস-প্রেসিডেন্ট থাকায় তারাও সরকারের সংসদীয় প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে থেকে গেল।
এর আগে গত সপ্তাহে এনএলডি তার নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করে। এ তালিকায় অং সান সুচিও আছেন, যিনি তার দেশের পররাষ্ট্র, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়, শিক্ষা এবং জ্বালানী ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সামলাবেন।
আর সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। এগুলো হলো, প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র এবং সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
দুই সন্তান ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী হওয়ায় মায়ানমারের সংবিধান সুচি’র প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ২০০৮ সালে দেশটির সেনা সরকারের সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী, যে ব্যক্তির বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী বা পুত্র-কন্যা অন্য কোনো দেশের নাগরিক, তিনি মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।
এ কারণে নির্বাচনের সময়ই সুচি ঘোষনা দিয়ে রেখেছিলেন, প্রেসিডেন্ট হতে না পারলে, তার চেয়ে বড় কিছু হয়ে দেশ পরিচালনা করবেন তিনি। বিশ্বস্ত থিন কিয়াওকে প্রেসিডেন্ট মনোনীত করে ও গুরুত্বপূর্ণ চারটি মন্ত্রণালয় নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তিনি তার কথারই বাস্তবায়ন করলেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬/আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা
আরএইচ