ঢাকা: ভারতের দক্ষিণ পশ্চিমের রাজ্য কেরালার একটি মন্দিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১০২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩৫০ জন।
রোববার (১০ এপ্রিল) ভোরে রাজ্যের রাজধানী তিরুবন্তপুরম থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় শহর কোলামের পুত্তিঙ্গল মন্দিরে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়।
বিভিন্ন পক্ষের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উৎসব ‘নবরাত্রি’ উদযাপনকালে আতশবাজি ফাটানো হচ্ছিল। এক পর্যায়ে এর স্ফূলিঙ্গ মন্দিরে রাখা আতশবাজির স্তূপের ওপর পড়ে। এতে মুহূর্তেই বিকট বিস্ফোরণ হয়। এরপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো মন্দিরে। এসময় দগ্ধ হয়ে মারা যান অনেকে। অনেকে নিহত হন পদদলিত হয়ে। আহত হন সাড়ে তিনশ’ মানুষ। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভোরের দিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের পর সকাল পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় রাজ্যের ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, উৎসব চলাকালে মন্দিরটিতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অগ্নিকাণ্ডে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার টুইটার বার্তায় জানান, তিনি কেরালায় যাচ্ছেন এবং শিগগির এই পরিস্থিতির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এরপরই এ ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ রুপি ও আহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার করে রুপি দেওয়ার ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে অগ্নিকাণ্ডস্থলে উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী ও জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেন।
শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্দি জানান, অগ্নিকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি, ভাইস প্রেসিডেন্ট হামিদ আনসারী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত সিং, অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, শিগগির ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি সভাপতি, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ অনেকে।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, মন্দিরে আতশবাজি ফাটানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি কর্তৃপক্ষকে। তারপরও তা ফাটানো হয়েছে। এ ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের নামে একটি মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬/আপডেট ১৩০৪ ঘণ্টা
কেআরএম/টিআই/এইচএ/