ঢাকা: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফকে অভিশংসনে রায় দিয়েছে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ ‘চেম্বার অব ডেপুটিজ’। এখানে ভোটাভুটিতে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়ে যাওয়ায় এখন এটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে উচ্চকক্ষ ‘সিনেটে’।
প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনে বিরোধী দলের উত্থাপিত প্রস্তাবের ওপর রোববার (১৮ এপ্রিল) চেম্বার অব ডেপুটিজে ভোটাভুটি হয়। এতে ভোট দেন চেম্বারের ৫১৩ সদস্য।
পরে ফলাফলে দেখা যায়, প্রস্তাব পাসে প্রয়োজনীয় ৩৪২ ভোটের বেশি পড়েছে অভিশংসন প্রস্তাবে। প্রস্তাবে ভোটদানকারীদের মধ্যে বিরোধী দলের পাশাপাশি ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের অনেকেও।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ভোটের সময় রাজধানী ব্রাসিলিয়াসহ অন্যান্য শহরের রাস্তায় অবস্থান নেয় হাজারো মানুষ। এ ভোট টেলিভিশনেও সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ফল প্রকাশ হতেই উল্লাস করতে থাকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা।
রৌসেফের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪ সালে পুনর্নির্বাচনের সময় বাজেট আইন লঙ্ঘন করে সরকারি হিসেবে জালিয়াতি করেছিলেন তিনি। এছাড়া, রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোবাসের কোটি টাকার একটি প্রকল্পেও দুর্নীতি করেছেন তিনি।
যদিও বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন রৌসেফ। তিনি অভিশংসনের উদ্যোগকে ‘বেসামরিক ক্যু বা অভ্যুত্থান’ বলেও চিহ্নিত করছেন। রৌসেফ বলেন, শেষ অবধি এর বিরুদ্ধে লড়ে যাবো।
প্রেসিডেন্টের পক্ষে লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ১৩ বছরে ধরে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টিও। দলের নেতা ও পার্লামেন্টারিয়ানরা অভিশংসন প্রস্তাব যেন সিনেটে পাস না হতে পারে সেজন্য এখন থেকেই দেন-দরবার শুরু করেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, চেম্বার অব ডেপুটিজে প্রস্তাবটি পাসের ফলে আগামী মাসেই এটি উত্থাপিত হবে সিনেটে। তাতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পড়ে গেলেই ক্ষমতাচ্যুত হবেন ব্রাজিলের অন্যতম জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার উত্তরসূরী রৌসেফ। আর ক্ষমতাচ্যুত হলে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে।
ব্রাজিলের রাজনীতির এই দশাকে ১৯৮৫ সালে সামরিক শাসনের অবসানের পর সবচেয়ে বড় ‘বিপর্যয়’ বলে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৬/আপডেট ১০২৫ ঘণ্টা
এইচএ/