ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সন্ত্রাসের নিন্দা, সার্ক সামিটের পরিবেশ তৈরির আহ্বান মালে-কলম্বোর

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৬
সন্ত্রাসের নিন্দা, সার্ক সামিটের পরিবেশ তৈরির আহ্বান মালে-কলম্বোর আগের সার্ক সম্মেলনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ

ঢাকা: ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় সার্কের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর বয়কটের মুখে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাটির ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। এই অবস্থায় সম্মেলনের পরিবেশ তৈরি করতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ।

একইসঙ্গে উপমহাদেশসহ সারাবিশ্বে সবরকমের সন্ত্রাসের নিন্দাও জানিয়েছে তারা।

যদিও এরইমধ্যে সার্কের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। আলোচনা চলছে বিমসটেক নিয়ে চিন্তাভাবনা করার। তবু ঘোষিত সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরিবেশ তৈরির জন্য জোর আহ্বান জানালো কলম্বো এবং মালে ।

ইসলামাবাদের সঙ্গে উত্তেজনার জেরে সেখানে অনুষ্ঠেয় সম্মেলন প্রথমে বয়কটের ঘোষণা দেয় ভারত। পরিবেশ নেই বলে সম্মেলন বয়কট করে আফগানিস্তান ও ভুটান। এরপর যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে নাক গলানোয় ইসলামাবাদে না যাওয়ার কথা জানায় বাংলাদেশও। এরপর বিরূপ পরিবেশের কথা বলে সম্মেলনে যোগদানে অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দিলো শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপও।

লঙ্কান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সার্ক সম্মেলনের পরিবেশ নেই বলে কলম্বোর কোনো প্রতিনিধি ইসলামাবাদে যাবে না। তাছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের স্বার্থে সার্থক আঞ্চলিক সহযোগিতার সফলতায় শান্তি ও নিরাপত্তা অতীব প্রয়োজনীয়। সার্কের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে আঞ্চলিক সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শ্রীলঙ্কা মনে করে, এ অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দরকার, যেন আঞ্চলিক সহযোগিতা নিশ্চিতের পরিবেশ তৈরি হয়।

শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে সবরকমের সন্ত্রাসের নিন্দা জানিয়ে এ সমস্যার সমাধানে চূড়ান্ত পথ অনুসরণের আহ্বানও জানানো হয়।

কেউ না গেলেও পাকিস্তান সার্ক সম্মেলন করবে বলে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে যে ঘোষণা দেওয়া হয়, সে বিষয়ে শ্রীলঙ্কার বিবৃতিতে বলা হয়, সার্কের গঠনতন্ত্র অনুসারে, সবরকমের সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিতে হবে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর পুরোপুরি মতৈক্যের ভিত্তিতে এবং এটা সার্ক সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও।

অপরদিকে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সার্ক সম্মেলন আয়োজনের পরিবেশ গড়ে তুলতে সব সদস্য দেশকে কাজ করতে হবে। সার্কের প্রত্যেকটি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান অথবা তাদের প্রতিনিধি এলেই সম্মেলন আয়োজন হতে পারে। সেজন্য মালদ্বীপ প্রত্যেকটি সদস্য দেশকে তাদের নেতাদের আলোচনায় বসতে মূল্যবান সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। আর সম্মেলনের পরিবেশ তৈরিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো সবরকমের সহযোগিতা করবে বলেও আশা করে মালদ্বীপ।

বিবৃতিতে ‍মালদ্বীপের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, বিশেষত বাইরে থেকে এসে (এক দেশের সন্ত্রাসী অন্য দেশে গিয়ে হামলা) সন্ত্রাস চালানোর নিন্দা জানানো হয়।

কার্যত এ বিবৃতিতে ভারত-পাকিস্তানকেই উত্তেজনা প্রশমন এবং নিজেদের অভ্যন্তরের সন্ত্রাস দমন করে সার্ক সম্মেলনের পরিবেশ তৈরির জন্য আহ্বান জানালো কলম্বো ও মালে।

যদিও দুই চিরবৈরী দেশের উত্তেজনায় সার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। যার প্রেক্ষিতে এরইমধ্যে নয়াদিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) ভারত ও বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়ে বলেছে, সার্ক ভুলে বিমসটেক (বহুপক্ষীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বঙ্গোপসাগরীয় উদ্যোগ) নিয়ে ভাবতে হবে।  

ওই থিংক ট্যাংকে আছেন ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, সময়ের প্রয়োজনে সার্ক ভুলে যেতে হবে। বিমসটেক হতে পারে সহযোগিতার ক্ষেত্র। বিমসটেকে আফগানিস্তান ও মালদ্বীপ পর্যবেক্ষক থাকতে পারে। আর পাকিস্তানকে পাশ কাটিয়ে যোগ করা যেতে পারে থাইল্যান্ড ও মায়ানমারকে।

এখন কার্যত নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করছে সার্ক, সংস্থাটির আসন্ন সম্মেলন এবং বিমসটেকের ভবিষ্যৎ।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৬
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।