ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সাবেক সেনার আত্মহত্যায় উত্তপ্ত ভারত, দু’দফায় আটক রাহুল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
সাবেক সেনার আত্মহত্যায় উত্তপ্ত ভারত, দু’দফায় আটক রাহুল

ঢাকা: ভারতে সেনা সদস্য সুবেদার রাম কিষাণ গ্রেওয়ালের আত্মহত্যায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতি। কিষাণের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ায় এরইমধ্যে কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীসহ দলটির কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়েছে।

আটক করা হয়েছে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা মনিশ সিসোদিয়াসহ আরও বেশ কয়েকজন রাজনীতিককে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, ঘটনাটি নিয়ে জলঘোলা করার রাজনীতি করছেন কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি।

ভারতীয় সেনাদের ‘ওয়ান র‍্যাংক ওয়ান পেনশন’ (ওআরওপি) প্রকল্পের বিষয়ে কথা বলতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পাড়িকরের সঙ্গে দেখা করতে ব্যর্থ হয়ে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) আত্মহত্যা করেন রাম কিষাণ। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিল্লির রাম মনোহর লহিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেই হাসপাতালের সামনে বসে বিক্ষোভ করছেন কিষাণের পরিবার ও স্বজনরা। বলছেন, ওআরওপি ইস্যুর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ময়নাতদন্ত করতে দেবেন না তারা। এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির নেতাকর্মীরাও।

সেই বিক্ষোভে গিয়ে কিষাণের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে বাধা দেওয়া হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীকে। এমনকি বিকেলে এক পর্যায়ে রাহুল গান্ধী ও কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনিশকে আটকও করা হয়। আটক করা হয় আরও ক’জন রাজনীতিককে।

রাহুল গান্ধীকে সেসময় আটক করে ৭০ মিনিট হেফাজতে রেখে ছেড়ে দিলে তিনি ‍আবারও কিষাণের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান। দেখা করে ফেরার সময় আবার তাকে আটক করা হয়। এখন রাহুল তার কংগ্রেস দলের কয়েকজন নেতাসহ দিল্লির তিলক মরগ থানায় আটক রয়েছেন।  

দফায় দফায় বিক্ষোভে যোগদানকালে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পুলিশকে দোষেন কেজরিওয়াল ও রাহুলরা।

কিষাণের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপদস্থ হয়েছেন সাবেক এ সেনা সদস্য। সেই অপমান সইতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এমনকি বিক্ষোভস্থলেও তাদের হেনস্থা করছেন পুলিশ সদস্যরা।

রাহুল এ প্রসঙ্গে বলেন, “এটাই হলো মোদিজির সরকার!” তিনি এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বলেন, “তোমাদের কি লজ্জা করে না দেশের একজন সৈনিকের সঙ্গে কী আচরণ করেছো? এখন সেই শহীদ সৈনিকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করছো?’

কেজরিওয়াল সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারকে ওআরওপি ব্যর্থতার জন্য দোষেন। তিনি সমালোচনা করেন সাবেক সেনাপ্রধান ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জেনারেল (অব.) ভি কে সিংয়েরও। ভি কে সিং ওই সেনা সদস্যের আত্মহত্যার জন্য তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, আত্মহত্যার পর কিষাণের মরদেহের পাশে একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া যায়। যেখানে তিনি ওআরওপি কার্যকরে সরকারের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

তার ছেলে জানান, কিষাণ প্রায়ই বলতেন, যদি সরকার ওআরওপি সংক্রান্ত দাবি পূর্ণ করতে না পারে, তবে তিনি আত্মহত্যা করবেন।

এই ঘটনায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতেও চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।