ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সিয়েরালিওনে বন্যায় রাস্তা ‘কাদার নদী’, ৩২১ প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
সিয়েরালিওনে বন্যায় রাস্তা ‘কাদার নদী’, ৩২১ প্রাণহানি সিয়েরালিওনে রাস্তা যেন কাদার নদী

স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলের দেশ সিয়েরালিওন। দেশটির রাজধানী ফ্রিটাউনসহ বিভিন্ন এলাকা যেমন পানিতে তলিয়ে গেছে, তেমনি শহরাঞ্চলের সড়কগুলোও রূপ নিয়েছে ‘কাদার নদীতে’, বিভিন্ন এলাকায় চলছে ভূমিধস। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় সোয়া ৩শ’ মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও অসংখ্য মানুষ। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক’দিন ধরে অবিরাম বর্ষণের পর সোমবার (১৪ আগস্ট) স্থানীয় সময় ভোরে রাজধানী ফ্রিটাউনের কাছে পার্বত্য শহর রিজেন্টসহ একাধিক স্থানে মারাত্মক ভূমিধস হয়। এতে কেবল রিজেন্টেই প্রায় ২০০ মানুষের প্রাণহানি হয়।

কাদার নিচে চাপা পড়ে যায় অসংখ্য মানুষ। রিজেন্ট ও ফ্রিটাউন মিলিয়ে প্রশাসনের তরফ থেকে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির কথা বলা হলেও আন্তর্জাতিক কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী বলছে, এ সংখ্যা অন্তত ৩২১।

বন্যার পর ভূমিধসের কারণে রাস্তাগুলো হয়ে পড়েছে যেন ঘোলাটে কাদার নদী। এ কারণে বিপর্যস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না সরকারি ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্ধারকারী বাহিনী। ত্রাণ ও উদ্ধার সহায়তা চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

বন্যায় ‘কাদার নদী’তে ডুবে আছে গাড়ি
আফ্রিকান বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, ভোরে ভূমিধসের সময় অনেকেই ঘুমিয়ে ছিলেন বলে লোকজন চাপা পড়ে যায় কাদার নিচে। সেজন্য ঠিক কতোজন নিখোঁজ রয়েছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় রিজেন্ট-ফ্রিটাউনসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ উদ্বাস্ত হয়ে পড়েছেন।

দুর্যোগকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ফোহ বলেন, শত শত মানুষ ভূমিধসে চাপা পড়েছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এটা ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়, আমি নিজেই ভেঙে পড়েছি।

বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে সরকারি বাহিনীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কাজ করছে বলেও জানান ভাইস প্রেসিডেন্ট।

বইছে কাদা-পানির ধারা
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এমন ভূমিধসের পরও অবিরাম বর্ষণ চলতে থাকায় লোকজনের হাহাকার চলছে রিজেন্ট ও ফ্রিটাউনে। সামান্য ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা চললেও দুর্যোগ মোকাবেলায় দারিদ্র্যপীড়িত দেশটি হিমশিম খাচ্ছে।

প্রায় ১২ লাখ লোকের বসতিপূর্ণ বন্দরনগরী ফ্রিটাউন ও অদূরের রিজেন্ট থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে কাজ করছে প্রশাসনের বিভিন্ন বাহিনী। ডাকা হয়েছে সেনাবাহিনীকেও।  

জনসংখ্যার প্রায় ৬০ ভাগ দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা সিয়েরালিওনকে ২০১৪ সালে কাঁপিয়ে দিয়েছিলো ইবোলা ভাইরাস। সে বছর ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায় আধুনিক চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত দেশটিতে। এর পরের বছর বন্যায় প্রাণ যায় ১০ জনের। বাস্তুহারা হয় অসংখ্য মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।