ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘ইরমা’ তাণ্ডব, ধ্বংসস্তূপ ফ্লোরিডা কি’র ২৫ ভাগ বসত-বাড়ি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
‘ইরমা’ তাণ্ডব, ধ্বংসস্তূপ ফ্লোরিডা কি’র ২৫ ভাগ বসত-বাড়ি ফ্লোরিডায় হারিকেন ‘ইরমা’র আঘাতে ভেঙে পড়া বাড়ি

হারিকেন ইরমা চলে গেছে। তবে ধ্বংসযজ্ঞের আলামত রেখে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডা এবং এর আশপাশের অন্তত আরও চারটি রাজ্যে। সচেতনতার কারণে প্রাণহানি অনেকাংশে এড়ানো গেলেও ফ্লোরিডার নিম্নাঞ্চলে রীতিমত প্রলয় পরবর্তী অবস্থা দেখা যাচ্ছে। প্রায় এক চতুর্থাংশ বসতবাড়িই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অসংখ্য দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গড়া চাবি আকৃতির ‘ফ্লোরিডা কি’।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজ্য ও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অধিদফতর থেকে ইরমা-বিপদ কেটে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি-ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন লোকজন। কিন্তু পথে পথে তারা দেখছেন ইরমার ধ্বংসলীলা।

বসত-বাড়িতে ফিরে দেখছেন গড়ে তোলা আবাসের চূর্ণ-বিচূর্ণ দশা।

গত রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ৪ নম্বর ক্যাটাগরির হারিকেনটি ১৯২ কিলোমিটার বেগে ফ্লোরিডায় আঘাত হানার পর এখন পর্যন্ত সেখানে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পুরো হারিকেন-প্রবণ এলাকায় মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।  

বিভিন্ন সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি ও ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায় ঝড়ের তাণ্ডব। এখানে-ওখানে উড়িয়ে নিয়ে ফেলা ঘরের চাল, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছপালা এবং চূর্ণ-বিচূর্ণ বাড়িঘর ইত্যাদি।

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ফ্লোরিডার এক বাসিন্দা
সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ফ্লোরিডা কি ও মিয়ামি সৈকত এলাকার অনেক জ্বালানি স্টেশন এখনও বন্ধ রয়েছে। নির্বিঘ্ন সংকেত পাচ্ছে না মোবাইল-ফোন সংযোগ। যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে।  

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে ফ্লোরিডার ৪৪ লাখ, জর্জিয়ার ৭ লাখ, সাউথ ক্যারোলিনার ৫৫ হাজার, নর্থ ক্যারোলিনার ২৯ হাজার এবং আলবামা অঙ্গরাজ্যের ৭ হাজার গ্রাহক। এদের মধ্যে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও।

হারিকেন দুর্বল হয়ে পড়তেই উদ্ধার তৎপরতায় নামে জরুরি দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তারা দুর্যোগকবলিতদের মধ্যে সরবরাহ করছেন জরুরি খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি।

হারিকেন সতর্কতা দেওয়ার সময় প্রায় পৌনে এক কোটি মানুষকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়। এই সতর্কতায় নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায় ৯০ হাজার মানুষ। এখন এই মানুষেরা ফিরতে শুরু করেছেন তাদের ক্ষতিগ্রস্ত আবাসে।

তাদের ঘরে ফেরার সায় দিলেও ফ্লোরিডার কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনও অনেক এলাকায় যোগাযোগ দুরূহ। বিশেষত অনেক এলাকায়ই বিদ্যুৎ সংযোগ পুনর্স্থাপিত হয়নি। তাই সবাইকে স্বল্প সেবাপ্রাপ্তির ব্যাপারে অবগত থাকতে হবে।
 
আগামী বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইরমা-বিধ্বস্ত ফ্লোরিডা পরিদর্শনে যাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হারিকেন ইরমা’র ধ্বংসলীলা
ফ্লোরিডায় আঘাত হানার আগে আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ইরমা ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র কিউবায়। সেখানে ৫ নম্বর ক্যাটাগরির হারিকেন হয়ে এটি আঁছড়ে পড়লে প্রাণ যায় প্রায় ৩০ জনের। ক্ষতিগ্রস্ত হয় অসংখ্য বাড়িঘর। এরপরই হারিকেনটি মেক্সিকো উপসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরকে সংযোগকারী ফ্লোরিডা প্রণালী হয়ে উত্তর দিকে এগিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।