ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গারাই বোমা ফাটাচ্ছে, ফের দোষারোপ সেনাপ্রধানের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
রোহিঙ্গারাই বোমা ফাটাচ্ছে, ফের দোষারোপ সেনাপ্রধানের মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং (ফাইল ছবি)

বাস্তবকে উপেক্ষা করে মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের আরও একটি বক্তব্য। যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, রাখাইনে সেনাবাহিনীর হামলায় জাতিগত নিধন, সেখানে কমান্ডার ইন চিফ বললেন, রোহিঙ্গারাই বোমা ফাটাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়!

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তিনি এ বিষয়ে নতুন করে মন্তব্য করেন। দোষ দিয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরাই’ মসজিদ ও মাদ্রাসায় বোমা ফাটিয়েছে।

অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গা যারা গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে হামলা চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর তারাই এবারও জড়িত। ইতোপূর্বে তিনি রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দেন।

আরও পড়ুন:
রোহিঙ্গারা মানুষ, পশুর মতো হত্যা করবেন না
জাতিসংঘ মহাসচিবের পাবলিক ব্রিফ চায় অর্ধ নিরাপত্তা পরিষদ
রাখাইনে এখনো পোড়ানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের গ্রাম
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু হতে পারে: সু চি


সিনিয়র জেনারেল মিন বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানরাই বুথিডং টাইনশিপে (জেলা) হাতে তৈরি স্থলমাইন পুঁতে রাখে। সে জন্যই বিস্ফোরণ ঘটে মসজিদ ও মাদ্রাসায়।

তিনি এও দাবি করেন, যারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাননি তাদের সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকাছাড়া করা হচ্ছে।

আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মিকে (আরসা) এসবের জন্য দায়ী করেন তিনি। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মসজিদ ও মাদ্রাসায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

আন্তর্জাতিক গণ-আদালতে সু চি ও সেনাপ্রধান দোষী সাব্যস্ত

‘বাঙালি সন্ত্রাসী আক্রমণে’ মর্মাহত মিয়ানমার সেনাপ্রধান!

রাখাইন রাজ্যে এখনও রোহিঙ্গাদের গ্রাম পোড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এতে সরাসরি দেশটির সেনাবাহিনী জড়িত। সংগঠনটির এ তথ্যের সঙ্গে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি’র দাবি পুরোপুরি বিপরীতমুখি। আর সেনাপ্রধানের বক্তব্য একদমই বাস্তবতা বিবর্জিত।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) বলছে, সহিংসতার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সোয়া চার লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।