ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা ফেরাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা করছি: সু চি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
রোহিঙ্গা ফেরাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা করছি: সু চি সম্মেলনে অং সান সু চি, (সংগৃহীত ছবি)

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ে (আসেম) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য চুক্তির কথা জানান তিনি।

সু চি বলেন, এ সপ্তাহে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা শেষে গত তিন মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ‘নিরাপদ ও স্বপ্রণোদিত প্রত্যাবাসনের’ বিষয়ে স্মারক সই হবে।

১৯৯০ সালের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কাঠামো অনুযায়ী এটি হতে পারে।

জাতিসংঘের ‘জাতিগত নিধনের’ তকমা আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কথা ঘুরিয়ে বলেন, এটি হয়েছে কি হয়নি, তা আমরা বলতে পারি না। সরকারের দায়িত্বের জায়গা থেকে আমরা নিশ্চিত করছি, এমনটি আর হবে না।

তবে এবারও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি সু চি। তাদের মুসলিমই বলেছেন।

বুধ ও বৃহস্পতিবার (২২ ও ২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সু চি সরকারের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সু চির পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মনে করা হচ্ছে সেখানে সমঝোতার বিষয়ে চূড়ান্ত হতে পারে।

এদিকে, ১৯৯২ সালের সমঝোতা বা যৌথ ঘোষণাকে ভিত্তি ধরে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে নিমরাজি ছিল মিয়ানমার। যাতে দ্বিমত ঢাকার। আবুল হাসান মাহমুদ আলী ইতোপূর্বে বলেছিলেন, ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ১৯৯২ সালের সমঝোতা বর্তমানে গ্রহণযোগ্য নয়।

নতুন চুক্তির বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নতুন সমঝোতার প্রয়োজন। তার একটি খসড়া মিয়ানমারের মন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা নেওয়া এবং কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদনও পূর্ণ বাস্তবায়নের বিষয়ে নতুন সমঝোতায় জোর দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের ২৪ আগস্টের পর থেকে অব্যাহত অত্যাচারে এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা সাত লাখের বেশি বলে জাতিসংঘ জানাচ্ছে। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা আরও লাখ খানেক বেশি। এছাড়া আগে থেকেই চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে থাকেন। এতে মোট রোহিঙ্গা সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট। সে রাতে রাখাইনে পুলিশ ক্যাম্প ও সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে নতুন করে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।