ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পরিবহন ধর্মঘটে প্রায় অচল তামিলনাড়ু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৮
পরিবহন ধর্মঘটে  প্রায় অচল তামিলনাড়ু বাস টার্মিনালগুলোতে আটকে পড়া উদ্বগ্ন যাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। সরকারি পরিবহন সংস্থার ১৪ হাজার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শনিবার (০৬ জানুয়ারি) সড়ক যোগাযোগ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।

পরিবহন শ্রমিকেরা অন্যান্য রাজ্যগুলোর সরকারের পরিবহন সংস্থাগুলোর চালকদের সমতুল্য বেতন দাবি করছে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো ২.৫৭ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি করলেও সরকার ২.৪৪ শতাংশ বাড়তে সম্মত হয়েছে রাজ্য সরকার।

তামিলনাড়ুর দুই কোটি মানুষ বাসে যাতায়াত করেন। ফলে ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অটোরিকশা ও ক্যাব চালকদের দাবি করা বেশি ভাড়ায় দীর্ঘ দূরত্বে যেতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। রাজধানী চেন্নাই ও অন্য এলাকায় পরিচালিত বাসের মাত্র এক তৃতীয়াংশ চালু থাকায় সেগুলোর জন্য হাজার হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছেন।

রাষ্ট্রীয় পরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর কোনো ফলপ্রসু সিদ্ধান্ত না পেয়ে ধর্মঘটে গিয়েছে বলে দাবি করছে ১২টি শ্রমিক ইউনিয়ন। মাদ্রাজ হাইকোর্ট শ্রমিকদের ধর্মঘট বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে অন্যথায় বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে। তবে ট্রেড ইউনিয়নগুলো বলছে, হাইকোর্টের আদেশ পেলে তারা ধর্মঘট বন্ধ করে দেবে।

সেবা চালু রাখতে অস্থায়ী চালকদের নিযুক্ত করেও পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না পরিবহন বিভাগ।

‘ধর্মঘটি চালকরা ভুল করছেন না। তবে সরকারের উচিত, একটি প্রশস্ত উপায়ে সমস্যাটির সমাধান করা’- বলেন পুদুচেরির একজন যাত্রী।

দন্ত চিকিৎসক স্মিথা থিরাউনমিয়ার বাস ডিপোতে আটকে ছিলেন। তিনি বিকল্পকে বাসে যেতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, সরকারের পরিস্থিতি খারাপ করার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। এটি মানুষের ওপর প্রভাব ফেলছে। অটোরিকশা চালকেরা অনেক বেশি ভাড়া দাবি করছেন এবং সবাই ক্যাব নিতে পারেন না। স্থানীয় ট্রেনগুলো সব স্থানের সঙ্গে সংযুক্ত নয়।

টি নগর বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত গৃহকর্মী কৃষ্ণাভৃমির কাজে যেতে দেরি হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি তিন বাড়িতে কাজ করি। আজ কোনো টাকা আয় করতে পারবো না। যেহেতু আমি সময়মতো যেতে সক্ষম হবো না। আমি অটোরিকশা ভাড়া নিতেও পারবো না’।

রাজ্য পরিবহন বিভাগের প্রায় ২২ হাজার ৫০০ বাসের যাত্রী পরিবহনে প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার কর্মী রয়েছেন।

পুডুচেরির গবেষক এ তামিলাভাবন বলেন, ‘রাজ্য সরকার ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে দমনের চেষ্টা করছে। তারা সমস্যাটি মোকাবেলা করতে চায় না’।

রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী এম আর বিজয় ভাস্কর ধর্মঘটকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করে শ্রমিকদের কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, অন্য বিভাগগুলো দশ বছর পর পর চালকদের বেতন বাড়ালেও পরিবহন বিভাগ বাড়ায় প্রতি তিন বছরে।

কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নগুলো তাদের দাবিকে ন্যায্য বলে দাবি করছে।

ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন লিমিটেডের কেন্দ্রীয় সম্পাদক সুন্দরারাজ এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমরা জনগণকে কষ্টের দিকে নিয়ে যেতে চাই না, কিন্তু সরকার আমাদের চাপ দিচ্ছে। অন্য বিভাগের চালকেদের সঙ্গে আমাদেরকে সমান চোখে দেখা ঠিক হবে না’।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।