ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়িতে শেকলে বাঁধা ১৩ ভাইবোন!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়িতে শেকলে বাঁধা ১৩ ভাইবোন! সন্তানদের সাথে ধর্ষকামী টারপিন দম্পতি। ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা: ডেভিড অ্যালেন টারপিন (৫৭) আর তার স্ত্রী লুইজ আন্না টারপিন (৪৯)। বাইরে থেকে দেখতে আর দশজন মানুষের মতোই। কিন্তু তারা যা করেছেন তা এক কথায় দানবীয় আর পৈশাচিক।

চরম ধর্ষকামী এই দম্পতি তাদের নিজেদের ১৩ সন্তানের ওপর ওপর দিনের পর দিন চালিয়ে গেছেন এমনসব নিপীড়ন, যা কল্পনাকেও হার মানায়।

পুলিশের বরাত দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এই দুই বিকৃতমনা নরনারী নিজেদের ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়িতে ১৩ জন ছেলেমেয়েকে অভিনব কায়দায় আটকে রেখেছিলেন।

এদের কাউকে কাউকে বিছানার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল  আংটা ও শেকল দিয়ে। এদের বয়স ২ বছর থেকে ২৯ বছর। পরে পুলিশ গিয়ে সবাইকে উদ্ধার এবং এই দুই নর-নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন চালানো এবং শিশুদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অ্যালেন ও আন্নার বাড়ি নামের এই নরককুণ্ডটির অবস্থান লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে।

উদ্ধার পাওয়া এই ১৩ শিশু-কিশোর-তরুণের সবাই আপন ভাইবোন। আর নিপীড়ক দুই নরনারী তাদেরই বাবা-মা।

ভিকটিমদের একজন গত রোববার কোনোমতে বাঁধন খুলে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। সে বাড়ির ভেতরে পাওয়া একটি সেলফোন থেকে পুলিশের ইমার্জেন্সি নাম্বারে কল দিয়ে সাহায্যের আকুতি জানায়। পুলিশও চটজলদি কর্তব্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

ক্যালিফোর্নিয়ার বিভারসাইড শেরিফ’স ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, যে মেয়েটি পুলিশকে ফোন করেছিল তার বয়স মাত্র ১০ বছর। একেবারেই জীর্ণশীর্ণ অপুষ্ট চেহারা তার। ফোন করে সে পুলিশকে জানায়, তার ১২জন ভাইবোনকে তার বাবা-মা বাড়িতে বন্দি করে রেখেছে।

পুলিশ দ্রুত সেখানে ছুটে গিয়ে দেখতে পায় এক অবিশ্বাস্য নারকীয় দৃশ্য। বেশ ক’জন ছেলেমেয়ে বিছানার সাথে শেকল, তালা আর আংটায় বেঁধে রাখা। আর সবখানে এমন উৎকট দুর্গন্ধ যে টেকা দায়।

কেন এতোগুলো ছেলেপুলেকে তারা এভাবে বেঁধে রাখা হলো সে প্রশ্নের কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা টারপিন দম্পতি পুলিশকে দিতে পারেনি।

বন্দি করে রাখা ছেলেমেয়েদের মধ্যে ৭ জনের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছর। এই ব্যাপারটা পুলিশকে সবচে অবাক করেছে।

ভিকটিমদের সবাই চরম অপুষ্টিআক্রান্ত আর হাড় জিরজিরে। এ মুহূর্তে সবাইকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।  

হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একজন মার্ক উফার একটি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘এসব দেখে হাসপাতালের কর্মীদের হৃদয় ভেঙে গেছে। আর আপনারা যা দেখতে পাচ্ছেন তা এককথায় অবিশ্বাস্য!’’

ধর্ষকামের নাটের গুরু অ্যালেন টারপিনের পরিচয় জানলে অবাক হবেন। মানুষরূপী এই পিশাচ পেশায় একজন শিক্ষক। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের ওয়েবসাইটে টারপিনের নামের পাশে পরিচয় লেখা: ‘প্রিন্সিপাল অব স্যান্ডক্যাসল ডে স্কুল’।

যে বাড়িতে ১৩ ছেলেমেয়েকে বন্দি করে রাখা হয়, সেই বাড়িটাতেই বেসরকারি স্কুল খুলেছিলেন টারপিন। অথচ স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকদের কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি যে, তাদের হাত কয়েক দূরেই রয়েছে নিপীড়নের নরকখানা।

বাংলাদেশ সময়:১৩১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।