ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাখাইনে পুলিশের গুলিতে ৭ বিক্ষোভকারী নিহত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮
রাখাইনে পুলিশের গুলিতে ৭ বিক্ষোভকারী নিহত মানচিত্রে লালচিহ্নিত এলাকাটিই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ছবি -সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ বিক্ষোভরত কয়েক হাজার মানুষের ওপর গুলি চালালে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। জখম হয়েছে পুলিশ সহ ৩৩ জনের বেশি। বিক্ষোভকারীদের সবাই স্থানীয় বৌদ্ধ।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বুধবার এখবর দিয়েছে।

খবরে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যের বৌদ্ধদের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব উদযাপনের ওপর মিয়ানমার সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটেছে।

তবে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম এটাই একমাত্র কারণ নয় বলে দাবি করেছে।

বেশিরভাগ সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী উৎসব উদযাপনে সরকারের অপ্রত্যাশিত নিষেধাজ্ঞা আরোপকে সেখানকার সাধারণ বৌদ্ধরা মেনে নিতে পারেনি। তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা একে তাদের দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হিসেবে গণ্য করে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে।

তবে দু একটি সংবাদ মাধ্যম জানায়, রাখাইন থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে, এটাও বৌদ্ধদের বিক্ষোভের আরেক কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

মঙ্গলবারের এ ঘটনাটি ঘটেছে রাখাইন রাজ্যের ম্রাউক-উ শহরে। শহরটি খুবই প্রাচীন। প্রতি বছরই ঘটা করে রাখাইন রাজ্যে সুপ্রাচীন এক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার গৌরব উদযাপন করা হয়। কিন্তু সরকার এবছর এই উৎসব উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বসে।  সরকারের যুক্তি, কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে জানানো হয়নি।

হাজার হাজার মারমুখি বিক্ষুব্ধ বৌদ্ধ  রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করার এক পর্যায়ে একটি সরকারি দপ্তরে ঢুকে পড়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

রাজ্য সরকারের উপ-পরিচালক তিন মাউং সোয়ে (Tin Maung Swe) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে তার দাবি পুলিশ বাধ্য হয়েই গুলি ছুড়েছে।

তার ভাষায়, পুলিশ বারবার বিক্ষোভকারীদের থামতে বলার পরও তারা থামেনি। বরং তারা উল্টো পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ অবস্থায় পুলিশ প্রথমে রাবার বুলেট এবং পরে গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। মিয়ানমার পুলিশের মুখপাত্র কর্নেল মিয়ো সোয়েও প্রায় একই ব্যাখ্যা দিয়েছেন।  

তিনি জানান, পুলিশের গুলিতে ৭ জন নিহত এবং কম করেও ১৩ জন আহত হয়েছে।

পাশাপাশি ক্ষুব্ধ জনতার ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে ২০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য জখম হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

উল্লেখ্য, রাখাইন রাজ্যের যে অংশটিতে সম্প্রতি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সবচেয়ে বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞটি চালানো হয়েছে, তার কেন্দ্রস্থলের মাত্র ৫০ কিলোমিটারের মধ্যেই ম্রাউক–উ শহরটির অবস্থান। মুসলিম নিধনযজ্ঞে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি এই এলাকার বৌদ্ধদেরও সমান অংশগ্রহণ ছিল।

বাংলাদেশ সময়:১৫৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৮
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।