ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের অর্থ চুরি: ফিলিপাইনে ব্যাংকারের সাজা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
বাংলাদেশের অর্থ চুরি: ফিলিপাইনে ব্যাংকারের সাজা

তিন বছর আগে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ লোপাটের ঘটনায় ম্যানিলাভিত্তিক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) তৎকালীন এক শাখা ম্যানেজারকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দিয়েছেন ফিলিপাইনের একটি আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) মাইয়া দেগিতো নামে ওই নারী কর্মকর্তাকে ৩২ থেকে ৫৬ বছর কারাদণ্ড এবং ১০৯ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে আটটি অর্থপাচারের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় প্রত্যেকটিতে চার থেকে সাত বছর করে কারাদণ্ড ঘোষিত হয়।

বিশ্বজুড়ে আলোচিত সেই সাইবার চুরির ঘটনায় এই প্রথম কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হলো।

হ্যাকাররা সুইফট কোড (এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের সংকেতলিপি) চুরি করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার (১০ কোটি ১০ লাখ ডলার) লোপাট করে নিয়ে যায়।

ওই অর্থ প্রথমে মাইয়া দেগিতোর পরিচালিত আরসিবিসির মাকাতি শাখার এক অ্যাকাউন্টে পাচার হলেও পরে তা মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে। সেই অর্থের একটি অংশ আবার চলে যায় শ্রীলঙ্কায়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, মাইয়া দেগিতো ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে আসা এবং তা চারটি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে জমা করার বিষয় তদারকি করেছিলেন বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।

যদিও গ্রেফতারের পর থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন মাইয়া। আদালতেও তিনি দাবি করেছেন, আরসিবিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে কিছু কাজ করতে হয়েছে।

তবে আদালত রায়ে বলেছেন, অবৈধ অর্থ লেনদেনে তার কিছুই করার ছিল না বলে মাইয়া যে দাবি করেছেন, তা পুরোপুরি নির্জলা ও বড় ধরনের মিথ্যা।

মাইয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ রায়ে তারা হতাশ। সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তারা।

নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকউন্টে রক্ষিত ওই অর্থ ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি চুরি হলেও জানাজানি হয় পরের মাস মার্চে। এ নিয়ে তখন ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সরকারের পক্ষ থেকে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এবং অর্থ ফেরত আনার আশ্বাস দেওয়া হয়। নৈতিক দায় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান পদত্যাগও করেন।

এরপর সরকারের নানা প্রক্রিয়া ও দেনদরবারের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ও ফিলিপাইনে যাওয়া ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরত আনা হয় কয়েক মাসের মধ্যেই। বাকি অর্থ এখনো ফেরত আসেনি।

এই রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মাইয়া দেগিতো সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আরসিবিসি থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর গত বছরের আগস্টে মাইয়াকে গ্রেফতার করে সেখানকার সরকার। বিচার প্রক্রিয়ার পর বৃহস্পতিবার এ সাজা ঘোষণা করলেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯/আপডেট ১২৪৫ ঘণ্টা
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।