ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পার্লামেন্টে ফিরছেন এমপিরা, বরিসকে পদত্যাগের আহ্বান 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
পার্লামেন্টে ফিরছেন এমপিরা, বরিসকে পদত্যাগের আহ্বান 

চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঘিরে অচলাবস্থা কাটাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রুল জারি করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। স্থগিতাদেশ অকার্যকর হওয়ায় আজই পার্লামেন্টে ফিরতে চলেছেন ব্রিটিশ এমপিরা। 

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।  

পার্লামেন্টের স্পিকার জন বারকো জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় অধিবেশন বসবে।

এতে প্রধানমন্ত্রীর কোনো প্রশ্নোত্তর পর্ব না থাকলেও, জরুরি প্রশ্ন, মন্ত্রীর বিবৃতি ও জরুরি বিতর্কের শুনানি হবে।  

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের রুলে ‘সম্পূর্ণ দ্বিমত’ পোষণ করলেও তা মেনে নেবেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। নতুন এ রুল জারির ফলে নিউ ইয়র্কে চলমান জাতিসংঘ সম্মেলনের সফর সংক্ষিপ্ত করেই দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।  

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চ্যান্সেলর মাইকেল গোভ বলেন, বরিস আদালতের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করবেন না, তবে তিনি তাদের অবস্থানে দ্বিমত পোষণ করেন।  পরবর্তীতে হাউজ অব কমন্সের (ব্রিটিশ পার্লামেন্ট) প্রধান জ্যাকব রেস-মোগ’র মাধ্যমে সরকার আদালতের এ রুলের ব্যাপারে নিজের অবস্থান জানাবে বলেও জানান এ চ্যান্সেলর।  

এদিকে সার্বিক এ পরিস্থিতিতে বিতর্কিত বরিসকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেরেমি করবিনসহ বিরোধীরা।  

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের পার্লামেন্ট স্থগিতাদেশ বাতিলের পর বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে করবিন প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পরে তিনি  ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ হয়ে পড়েছেন।  

চলতি মাসের প্রথম দিকে ব্রেক্সিট অচলাবস্থা নিরসনের কূটকৌশল হিসেবে ব্রিটিশ সংবিধানের বিশেষ বিধি ‘প্রোরোগেশন’ (সরকারের যে সিদ্ধান্তে আইনপ্রণেতাদের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকে না এমন ব্যবস্থা) ব্যবস্থার মাধ্যমে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করেন বরিস জনসন। বিধি অনুসারে তিনি ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে পার্লামেন্ট স্থগিতে আদেশ দেওয়ার পরামর্শ দিলে তা কার্যকর হয়ে যায়।  

সে সময় বরিসের প্রোরোগোশেন পদক্ষেপের সমালোচনা করেন বিরোধীরা। পরবর্তীতে ওই সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রায় দেন স্কটিশ আদালতও। তখন ওই আদেশের বিরুদ্ধে বরিস সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবে বলে জানায়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টও তার সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রায় দিলেন।  

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রানিকে পার্লামেন্ট স্থগিতে বরিসের দেওয়া পরামর্শ ‘বেআইনী ও অকার্যকর’।  

আগামী ৩১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়ে আছে। কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি বরিস চুক্তি হোক বা না-হোক ওই দিনই ব্রেক্সিটের বাস্তবায়ন চান। বিরোধীরা যেন সে কাজে বাগড়া দিতে না পারে, তা ঠেকাতেই ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিতের বুদ্ধি কষেন বরিস। এতে করে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ ঠেকাতে বিরোধীরা হাতে পর্যাপ্ত সময় পাবে না।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নতুন সিদ্ধান্তে পার্লামেন্ট অধিবেশন পুনরায় চালু হওয়ায় ব্রেক্সিট ও বরিসের ভাগ্যে নতুন মোড় নিলো। আগামীতে এর ফল কী দাঁড়ায় তাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯  
এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।