ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

নাগরিকত্ব আইন

বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না: মমতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না: মমতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় সংসদে পাস হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তবে, বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ার করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।

খবরে বলা হয়, শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও রেল লাইন অবরোধ করে একাধিক ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

এসময় বিভিন্ন স্টেশনে ভাঙচুর করেন ও টোল প্লাজাসহ অনেক বাসেও আগুন ধরিয়ে দেন তারা। বিক্ষোভের জেরে অনেক অঞ্চলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মালদহের হরিশচন্দ্রপুর স্টেশনে ভাঙচুর করে ট্রেনে পাথর ছোড়া হয়। শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজ্যের বেশিরভাগ স্টেশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

এ পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ার করে বলেন, থানা, বাস-রেল স্টেশনসহ সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। এসময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আহ্বান জানান তিনি।  

মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, রোববার থেকে আন্দোলনে সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না।  

এছাড়া, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রেল স্টেশনগুলোতে জিআরপি নিরাপত্তা দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রয়োগ করা হবে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর নিরোধক আইন। ইতোমধ্যে বেশকিছু অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। অশান্তিতে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের সাইবার থানায় একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, যে সব এলাকায় ট্রেন বা স্টেশনে আগুন দেওয়া হয়েছে, সেখানে পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় বাধা দেওয়া যায়নি বিক্ষোভকারীদের।  

অপরদিকে, শান্তিরক্ষায় রাজ্যকে ‘ব্যর্থ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, যারা আন্দোলন করছে, তারা সন্ত্রাসবাদী ও অনুপ্রবেশকারী।  

এদিকে, শনিবার সকাল ১০টা থেকে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয় হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। গরফা সেতুর ওপর যাত্রীদের নামিয়ে আটটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। খেজুরতলার কাছে আরও দু’টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। দমকল ও পুলিশের দিকে পাথর ও বোমা ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। পাথরের আঘাতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্বাতী ভাঙালিয়াসহ আট জন আহত হন। পরে কমব্যাট ফোর্স এসে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।  

হাওড়ার বিভিন্ন স্টেশনেও ভাঙচুর ও অবরোধ করা হয়। মুর্শিদাবাদে বাস, ট্রেন ও টোল প্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে টায়ার পুড়িয়ে বা গাছের গুঁড়ি ফেলে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে সে সব অঞ্চলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।  

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১২ ডিসেম্বর পাস হওয়া আইনটির সমালোচকদের মধ্যে অন্যতম। আইনটির প্রতিবাদে ডিসেম্বর জুড়ে রাজ্যে ধারাবাহিক র‍্যালি আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে তার নেতৃত্বের তৃণমূল কংগ্রেস।

নতুন পাস হওয়া আইনে ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসিসহ অমুসলিম অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।  

বাংলাদেশ: ১২২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।