দেশটির কোনো প্রধান এভাবে প্রকাশ্যে প্রথমবারের মতো একথা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, দেশটির রাজধানীর কলম্বোতে জাতিসংঘের দূত হানা সিঙ্গারের সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এ কথা স্বীকার করেন।
পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টর দপ্তরের পাঠানো এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়, নিহতদের পরিবারকে মৃত্যু সনদ দিতে কাজ চলছে।
শ্রীলঙ্কার আইন অনুযায়ী, সনদ না থাকলে নিখোঁজ স্বজনের সম্পত্তি, ব্যাংক হিসাব বা অন্যান্য সম্পদ তার পরিবারের সদস্যরা আর পাবেন না।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন সময় নিখোঁজদের শত শত পরিবার তাদের স্বজনেরা কোথায় আছেন তা জানতে চেয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তাদের পরিবারের সদস্যরা বন্দি রয়েছেন। একই সঙ্গে তারা বেঁচে রযেছেন বলেও ধারণা ছিল অনেকের।
যদিও এ অভিযোগ সব সময়-ই নাকচ করে এসেছে দেশটির সরকার।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের দপ্তরের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসি প্রতিবেদনে জানায়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের অধিকাংশই দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী লিবারেশন অব তামিল টাইগার্স ইলমের (এলটিটিই) নিয়োগ করা কর্মী ছিলেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়টি সমাধানে তার পরিকল্পনার জানিয়েছেন। এই নিখোঁজ ব্যক্তিরা আসলে বেঁচে নেই বলেও দূতকে অবহিত করেছেন তিনি।
২৬ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর ২০০৯ সালের মে মাসে বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের পরাজিত করে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী।
দ্বীপ দেশটিতে ১৯৮৩ সালে পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ শুরু করেছিল তামিল বিদ্রোহীরা। কিন্তু দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলি বৌদ্ধ-সমর্থিত সরকার শেষ পর্যন্ত তাদের দমন করতে সক্ষম হয়।
এই যুদ্ধে আনুমানিক এক লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটে। নিখোঁজ হয় প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এই নিখোঁজ মানুষদের অধিকাংশই ছিলেন তামিল।
যুদ্ধের শেষ দিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ওই বিদ্রোহ নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
যুদ্ধ শেষে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ আনে জাতিসংঘ। আর নিখোঁজ লোকজন বেঁচে ছিলেন বলেই আশায় বুক বেঁধেছিল তাদের স্বজনেরা। কিন্তু তাদের সেই আশা যেন পরিণত হলো দুঃস্বপ্নে!
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
এমএ/