বায়ুদূষণ শরীরে ফুসফুস এবং হার্টের ক্ষতির কারণ হিসেবে পরিচিত। এটি বছরে কমপক্ষে আট মিলিয়ন অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণের অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য ক্ষতির অর্থ শ্বাসকষ্টের সংক্রমণ। যেমনটি কোরোনা ভাইরাসের লক্ষণের মধ্যেও রয়েছে। এছাড়া নগরের বিষাক্ত ধোঁয়ায় যারা আক্রান্ত হন, তারা করোনা ভাইরাসের চেয়ে আরও গুরুতর স্বাস্থ্য অবনতির দিকে যেতে পারেন।
যদিও এশিয়া দেশ চীনসহ ইউরোপের দেশগুলোতে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে গিয়ে বায়ুদূষণ অনেকটা কমে গেছে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা, দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। ঘোষণা দেওয়া হয়েছে মানুষজনকে অবরুদ্ধ করে রাখার।
আর এ কারণে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল কমে গেছে অনেক। একইসঙ্গে কলকারখানায়ও স্থবির হয়ে গেছে কর্মপরিবেশ। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ করছে, এমন আরও অনেক কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে।
মার্কিন বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বায়ুদূষণ জনিত কারণে চীনে হাজার হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু এবার দেশটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশের প্রভাবে সেটা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। আর তাতে মৃত্যু হার যে পরিমাণ হ্রাস পাবে, তা দেশটিতে করোনা ভাইরাসে যে পরিমাণ মৃত্যু হয়েছে, সেটার চেয়ে বেশি হবে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনে এ পর্যন্ত তিন হাজার ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ রোগে। এছাড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত এবং দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির ভয়াবহ চিত্র তো আছেই।
গার্ডিয়ান বলছে, উন্নত দেশগুলোতে বায়ুদূষণের পরিমাণ তুলনামূলক কমেছে। তবে এটা স্পষ্ট, বায়ুদূষণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে দিনদিন। অর্থাৎ এ কষ্টের বোঝা কিন্তু কমছে না। এছাড়া বিষাক্ত ধোঁয়া ও বেশি পরিমাণ বায়ুদূষণের দেশগুলোতে চরম বিপর্যয় ঘটছে ক্রমে ক্রমে। যেমন ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বায়ুদূষণের কারণে ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে।
যারা দীর্ঘস্থায়ীভাবে ফুসফুস এবং হার্টের রোগে ভুগছেন, তাদের সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব রোগীর বেশির ভাগই বায়ুদূষণের দীর্ঘমেয়াদী এক্সপোজারের শিকার হয়েছেন। এমনকি তারা ফুসফুস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছেন বায়ুদূষণের কারণে। তখন তাদের মারা যাওয়ার শঙ্কাই বেশি থাকে।
আর এটি সম্ভবত কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রেও হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় শ্বাস-প্রশ্বাস সোসাইটির পরিবেশগত স্বাস্থ্য কমিটির সদস্য এবং ইতালির ক্যাগলিয়ারি ইউনিভার্সিটির সারা দে ম্যাথেইস। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নষ্ট করে দিচ্ছে বায়ুদূষণ।
এদিকে, করোনা ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার ৯৮১ জনের। এছাড়া বুধবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত বিশ্বের ১৬৫টি দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৯৮ হাজার ৩৯৪ জন।
আরও পড়ুন>> ‘বসবাস অনুপযোগী’ শহরের তালিকায় ঢাকা তৃতীয়
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২০
টিএ