রাজধানী জাকার্তার কফিন নির্মাতা সাহরনি ব্যস্ত কফিন তৈরিতে। জাকার্তার পূর্বাঞ্চলে পন্দক কেলাপা কবরস্থানের কাছেই তার কারখানা।
৩৮ বছর বয়সী সাহরনি বলেন, ‘সাধারণত আমরা প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাতটি কফিন বিক্রি করি, কিন্তু এখন দৈনিক ২০ থেকে ৩০টি কফিন বিক্রি হয়। ’
তার কারখানার তাকে রাখা সদ্য রঙ করা কফিন, আর বাইরেই সারি করে পুঁতে রাখা সাদা ক্রুশ রোদে শুকাচ্ছে।
সাহরনি বলেন, ‘আমরা এখন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করি। ’
যে কারখানায় তিনি কাজ করেন তারা সাধারণত ইন্দোনেশিয়ার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য কফিন তৈরি করেন। কিন্তু এখন তারা মুসলমানসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্যই কফিন বানাচ্ছেন। আগে মুসলমানদের কাফনে জড়িয়ে কবর দিলেও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে শনাক্ত বা সন্দেহভাজন কোভিড-১৯ রোগী, সবার জন্যই কফিন ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বুধবার (০৮ এপ্রিল) পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় তিন হাজার কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২৪০ জন। তবে স্বাস্থ্য ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষা খুব কম এবং মৃত্যুর হার বেশি হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
রয়টার্স জানায়, শুধু মার্চ মাসেই জাকার্তায় প্রায় ৪ হাজার ৪শ’ কবর দেওয়া হয়েছে, যা গত দুই বছরের যে কোনো মাসের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। এ সংখ্যাই ইঙ্গিত দেয়, ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।
জাকার্তা গভর্নরের অফিস জানায়, ২ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৩৮ জনেরও বেশি মরদেহ কোভিড-১৯ এর বিশেষ নীতিমালা মেনে দাফন করা হলেও এ ভাইরাসে সরকারের দেওয়া মৃত্যুসংখ্যা এর অর্ধেক। কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাস পরীক্ষার ফল আসার আগেই রোগী মারা যাওয়ায়, সতর্কতার জন্য নিয়ম মেনেই দাফন করা হয় তাদের।
প্রকৃত সংখ্যা যাই হোক না কেন, এক কোটি মানুষের শহর জাকার্তায় কফিন নির্মাণ ও দাফনের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটছে।
ইন্দোনেশিয়ার ওয়েস্ট জাভা প্রদেশে পুরনো একটি বন্ধ কারখানা আবার খুলেছে সাহরনির প্রতিষ্ঠান। তারা নতুন এক ধরনের সস্তা কফিন তৈরি করা শুরু করেছেন এবং হাসপাতালগুলোতে এক হাজার কফিন দান করেছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২০
এফএম