বিবিসি জানায়, বুধবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে ভোটকেন্দ্রগুলোতে মাস্ক ও প্লাস্টিক গ্লাভস পরা ভোটারদের সমাগম লক্ষ করা যাচ্ছে। তাদের অবশ্যই মাস্ক পরে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং একে অপরের কাছ থেকে অন্তত এক মিটার দূরত্বে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।
প্রথমে তাদের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হবে, তারপর তাদের হাত জীবাণুমুক্ত করা হবে। তারপর প্লাস্টিক গ্লাভস পরা হাতে ভোটিং স্লিপ দেওয়া হবে এবং ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে তারা ভোট দেবেন।
দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে অনুষ্ঠিত এ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ’ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। ৩৫টি দলের নিবন্ধিত প্রার্থী রয়েছেন। তবে মূল প্রতিযোগিতা হবে ক্ষমতাসীন মিনজু (ডেমোক্র্যাটিক) পার্টি এবং প্রধান বিরোধীদল ইউনাইটেড ফিউচার পার্টির (কনজারভেটিভ) মধ্যে।
২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে অনেকটাই প্রার্থীদের পরীক্ষা এবং দলের জনপ্রিয়তা যাচাই করা হয়।
করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন সমালোচকরা। কিন্তু শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোট।
নির্দিষ্ট দূরত্বে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। এক তরুণী ভোটার বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম মানুষ আসবে না তাই নির্বাচন পেছানো উচিত ছিল। কিন্তু আমি আসার পর দেখি আরও অনেকেই ভোট দিতে এসেছেন। তাই আমি উদ্বিগ্ন নই। ’
১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন, যা মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ। এ প্রথম ১৮ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। আগে এ বয়স ছিল ১৯ বছর।
দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচন পেছানোর ইতাহাস নেই। এমনকি ১৯৫২ সালে কোরিয়ান যুদ্ধের সময়ও পেছানো হয়নি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
কর্মকর্তাদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ এখন সংক্রমণে ঝুঁকি এড়ানোর ব্যবস্থা করা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কারো শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে ভোট দেওয়ার জন্য তাদের পৃথক স্থানে নেওয়া হবে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা তাদের ভোট মেইল করতে পারবেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে ৫ লাখ ৫০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। প্রায় ১৪ হাজার ভোটকেন্দ্র জীবাণুমুক্ত করেছেন তারা এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে সারি বেঁধে দাঁড়ানোর জন্য চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত শনাক্ত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৫৯১ এবং মারা গেছেন ২২৫ জন। এ রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ। দেশটিতে ফেব্রুয়ারি মাসে রোগটি দ্রুত ছড়াতে শুরু করলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২০
এফএম