টিকা আবিষ্কারের পর তা মানবদেহে প্রয়োগের উপযুক্ত করতে যেখানে পাঁচ বছরের মতো সময় লাগে, সেখানে এই মহামারি রুখতে বিজ্ঞানীরা ১২ থেকে ১৮ মাস সময় চাচ্ছেন। কিন্তু দিন দিন আক্রান্ত সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন ট্রাম্প প্রশাসন সেটাকে আট মাসের মধ্যেই নামিয়ে এনেছে।
এজন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয়ও করছে দেশটি। অপারেশন ওয়ার্প স্পিডের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে বলছেন, এটি সফল না হলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তবে এই ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া এখন আর কোনো পথও নেই।
বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি, মার্কিন সরকার ও দেশটির সামরিক বাহিনী যৌথভাবে পরিচালনা করছে অপারেশন ওয়ার্প স্পিড।
ট্রাম্পের চিকিৎসা উপদেষ্টা সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি কয়েকদিন আগেও বারবার বলেছেন টিকা তৈরির জন্য অন্তত ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে। এখন তিনিও বলছেন, ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যেই কয়েক মিলিয়ন ডোজ টিকা তৈরির একটি বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভ্যাকসিন তৈরির আদর্শ সময়কে ভুলে গিয়ে দ্রুত গতিতে বাজারে আনার জন্য তাগাদা দিয়েছেন।
তবে অপারেশন ওয়ার্প স্পিড প্রকল্পে কোন ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যেটা সবচেয়ে ভালো কাজ করবে, সেটা নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত রয়েছে। বর্তমানে ভ্যাকসিন নিয়ে ৭০টির মতো প্রকল্পে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।
ট্রাম্প প্রশাসন তার দেশের জনগণের জন্য টিকা বাজারে আনতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার জন্যও প্রস্তুত রয়েছে।
কেবল যুক্তরাষ্ট্রই দ্রুত ভ্যাকসিন বাজারের আনার চেষ্টা করছে বিষয়টি এমন নয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানীও র্যাপিড ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে মানবদেহে তা প্রয়োগও করা হয়েছে। এমনকি গিলবার্ট ৮০ ভাগ সফল হওয়ার কথাও বলছেন। আর আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কয়েক মিলিয়ন ডোজ বাজারে আনতে চান তিনি।
ইতোমধ্যে করোনা রোগীদের দ্রুত রোগমুক্তির জন্য বেশকিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে। এরই ধারাবাহিকতায় অতি সম্প্রতি মার্কিন এলার্জি ও সংক্রামক রোগ বিষয়ক ইনস্টিটিউট রেমডিসিভির প্রয়োগ করার অনুমতি দিয়েছে। এটি প্রয়োগের পর রোগী সেরে ওঠার সময় কমে আসার প্রমাণও পেয়েছে দেশটি।
বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭৫ আর মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৪৪ হাজার ৫৯৬ জন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে। ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৪ জন। এমনকি মৃত সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি দেশটিতে। এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৫৩৪ জন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৮ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২০
ইইউডি/টিএ