ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ কোরিয়ায় নাইটক্লাব থেকে নতুন করে ছড়ালো করোনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২০
দক্ষিণ কোরিয়ায় নাইটক্লাব থেকে নতুন করে ছড়ালো করোনা ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় অনেকটাই আদর্শ হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। এরইমধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে।

রোববার (১০ মে) দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৪ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বাধিক। অনুসন্ধানে দেখা যায়, কয়েকটি নাইটক্লাব কেন্দ্র করে নতুন করে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

কোরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (কেসিডিসি) জানায়, শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ২৬ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন এবং আটজন বিদেশফেরত।

রোববার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯ এপ্রিলের পর সর্বাধিক। চীনের পর ভাইরাসটি প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। তখন ভাইরাসটি ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়ে দেশটি। গত ১০ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা শূন্য বা নগন্য ছিল। গত কয়েক সপ্তাহে নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ এর কাছাকাছি।

রাজধানী সিউলের নাইটক্লাবগুলো থেকে ছোট আকারে আবারও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। নাইটক্লাব ঘুরে আসা ত্রিশের কাছাকাছি বয়সের একজন পুরুষের শরীরে ভাইরাসটি ধরা পড়ে। তারপর ‘কন্ট্যাক্ট ট্র্যাসিং’ এর মাধ্যমে দেখা যায়, শুক্রবার (৮ মে) পর্যন্ত অন্তত ১৫ ব্যক্তি ওই লোকের সংস্পর্শে এসেছেন। রোববার স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত ২৬ জনের মধ্যে ১৪ জনই সিওলের। তবে এ সংক্রমণের সঙ্গে মোট কতজন সংযুক্ত তা জানায়নি কেসিডিসি।

এ ঘটনার পর শনিবার (৯ মে) সিউলে রাতকেন্দ্রিক সব বিনোদনকেন্দ্র অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্লাবগুলোতে যাওয়া প্রায় দেড় হাজার মানুষকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে যারা সেখানে গেছেন, তাদের ১৪ দিনের জন্য আইসোলেশনে থাকতে এবং করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে।

সংক্রমণ প্রায় শূন্য হয়ে আসায় সম্প্রতি সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। শিগগিরই স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথাও ভাবছিল দেশটি। এমন সময়ই নতুন প্রাদুর্ভাব দেখা দিলো।

চলতি বছরের শেষের দিকে দ্বিতীয়বারের মতো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন। যে কোনো সময় করোনা ভাইরাস আবারও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি জানান তিনি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার অভিষেকের তৃতীয় বার্ষিকে টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগে এটি শেষ হবে না। মহামারি প্রতিরোধে নিজেদের একটুও অসতর্ক হতে দেওয়া যাবে না। শেষ সময় পর্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি দীর্ঘ যুদ্ধে আছি। এ পরিস্থিতি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত দৈনিক জীবন আগের মতো হলেও আমি সবাইকে সুরক্ষায় সতর্কতা এবং বিধিনিষেধ মেনে মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। ’

ব্যাপক পরীক্ষা এবং ইনটেনসিভ কন্ট্যাক্ট ট্র্যাসিংয়ের মাধ্যমে কঠোর লকডাউন ছাড়াই মহামারি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয় এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটি। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে দীর্ঘকালীন লড়াইয়ে কেসিডিসিকে আরও ক্ষমতাধর করার জন্য প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ প্রশাসন’ দেওয়া হবে বলে জানান মুন।

স্থানীয় সরকারও আরও বিশেষজ্ঞ নিয়ে মহামারি মোকাবিলায় নিজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। জাতীয় সংক্রামক রোগ গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। একইসঙ্গে সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে বলেও জানান মুন। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় এ পদক্ষেপগুলো অতি জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।