যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনভায়রনমেন্টাল ওয়েবসাইট ‘কার্বন ব্রিফ’ এর একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১২ মে) বিবিসি এ তথ্য জানায়।
৩৭ বছর ধরে ভারতে কার্বন নিঃসরণ বেড়েই চলেছে।
কার্বন নিঃসরণ এত কমার অন্যতম কারণ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। মার্চে এটি কমেছে ১৫ শতাংশ এবং এপ্রিলে ৩১ শতাংশ।
লকডাউনের আগেই কয়লার চাহিদা কমছিল। ২০২০ সালের মার্চ মাসে ভারতের অর্থবছর শেষে দেখা যায়, কয়লার ব্যবহার কমেছে ২ শতাংশ। অথচ গত দশকে তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতি বছর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করে বাড়ছিল।
একইসময়ে তেলের চাহিদাও কমেছে। ফলে ২০১৯ সালের শুরু থেকে কার্বন নিঃসরণ কিছুটা কমতে শুরু করে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে গোটা ভারত লকডাউন থাকায় কার্বন নিঃসরণ নাটকীয়ভাবে অনেকটা কমে যায়। বিশেষ করে লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকা এর একটি কারণ।
মার্চ মাসে তেলের ব্যবহার কমে ১৮ শতাংশ। অন্যদিকে গত এক বছরে নবায়নযোগ্য শক্তির যোগান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
শুধু ভারত নয়, আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার (আইইএ) তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বে কয়লার ব্যবহার কমেছে ৮ শতাংশ। অন্যদিকে বায়ু ও সৌর শক্তির চাহিদা বেড়েছে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা কমার আরেকটি কারণ এর উৎপাদন খরচও বেশি। সে তুলনায় সোলার প্যানেল বা উইন্ড টারবাইন স্থাপনের খরচ কম। তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা, গ্যাস বা তেল কিনতে এর চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয়।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমার বিষয়টি স্থায়ী নাও হতে পারে।
মহামারির আতঙ্ক কমে আসলে, অর্থনীতি ফের সচল করলেই কার্বন নিঃসরণ আবারও বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে পরিবশগত বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। অন্য দেশগুলোও একই কাজ করতে পারে।
তবে কার্বন ব্রিফের পরামর্শ অনুযায়ী, লকডাউনের পর ভারত যদি নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকে, তাহলে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ নিম্নমুখী থেকে যাবে। কেননা কয়লাভিত্তিক বিদুতের খরচ এর চেয়ে অনেক বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় ২ দশমিক ৫৫ রুপি। বিপরীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড়ে খরচ হয় প্রতি ঘণ্টায় ৩ দশমিক ৩৮ রুপি। পাশাপাশি বায়ুদূষণ কমাতেও নবায়নযোগ্য শক্তির ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
এফএম