চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১২ মে) বিবিসি এ তথ্য জানায়।
পরিকল্পনাটি এখনো প্রথম ধাপে রয়েছে।
৩ এপ্রিল থেকে উহানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী না থাকলেও এ সপ্তাহের শুরুতে ছয়জন রোগী শনাক্ত হওয়ায় এ পরিকল্পনা নিলো শহরটি।
করোনা ভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ১১ সপ্তাহ কঠোর লকডাউনে ছিল উহান। নতুন রোগী না থাকায় গত ৮ এপ্রিল লকডাউন তুলে দেওয়া হয়।
প্রথমদিকে মনে হচ্ছিল স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরছে উহান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলে এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম ফের সচল হতে শুরু করে। চালু হয় গণপরিবহন। কিন্তু একটি আবাসিক এলাকা থেকে নতুন করে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ায় জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা আবারও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
এ সংশ্লিষ্ট নথিতে উহানের জেলাগুলোকে ১০ দিনে করোনা পরীক্ষার বিস্তারিত পরিকল্পনার তথ্য মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়।
প্রতিটি জেলা এর অধিবাসীর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবে। বর্তমানে জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ না থাকলেও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে।
এ পরিকল্পনাকে নথিতে ‘১০ দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে বয়স্ক ব্যক্তি এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
তবে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, গোটা শহর পরীক্ষা করা দুঃসাধ্য ও ব্যয়বহুল হবে।
উহান ইউনিভার্সিটির ঝংনান হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (এইসিইউ) পরিচালক পেং ঝিয়ং বলেন, ‘শুধু স্বাস্থ্যকর্মী, ঝুঁকিতে থাকা এবং রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষার আওতায় আনা হতে পারে। ’
আরেক পরিচালক বলেন, ইতোমধ্যে যেহেতু উহানের প্রায় ৩০ থেকে ৫০ লাখ মানুষের পরীক্ষা করা হয়েছে, সেহেতু ১০ দিনের মধ্যে বাকি ৬০ থেকে ৮০ লাখ মানুষের পরীক্ষা করা ‘সম্ভব’।
হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক প্রায় ৩ লাখ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৯০ লাখ মানুষকে পরীক্ষা করেছে দেশটি।
চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘উইবো’তে অনেকেই ১০ দিনে বিশাল সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা করা আসলেই সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তবে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চীনা কর্তৃপক্ষ কোনো ছাড় দিতে চাইছে না, তাই এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (১১ মে) চীনে মাত্র একজন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়। এতে চীনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৮২ হাজার ৯১৯ এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩৩ জন। এছাড়া, কয়েকশ’ উপসর্গহীন রোগী রয়েছে, যাদের পর্যবেক্ষণ করছে উহান স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
এফএম